আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস উপলক্ষে 'মার্চ ফর প্যালেস্টাইন' কর্মসূচির আওতায় ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম. মাহফুজুর রহমান, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইবরাহীম অংশ নেন।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা 'ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি', 'ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ', 'জায়নাজম নিপাক যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক', 'জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মহিবুর রহমান মুহিব বলেন, 'গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ৪৪ হাজারেরও বেশি নারী-শিশুসহ ফিলিস্তিনিদের শহীদ করা হয়েছে। এই ইহুদিবাদী সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমাদেরকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববাসীর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায় এবং ফিলিস্তিন ও মানবিকতার পাশে এগিয়ে আসার।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক বলেন, 'গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের দেশের শিশু, জনগণ এবং বেসামরিক মানুষের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। গণহত্যার ফলে আমরা যেখানে বসবাস করছি সেখানে দিনের পর দিন মানবতা কমছে। আমরা বাংলাদেশি জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে উপনিবেশবাদ তৈরির জন্য যে অপারেশন চালানো হচ্ছে, যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে তা একদিন বন্ধ হয়ে যাবে। এবং এই দিন খুব বেশি দূরে নয়।'
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া আয়ান বলেন, 'নিয়ম করে যেমন সূর্য উঠে সূর্যাস্ত যায়, ঠিক তেমনি নিয়ম করে ফিলিস্তিনিদের জীবনে নির্মমতা নেমে আসে। নির্বিচারে তাদেরকে ইসরাইলী ইহুদীরা হত্যা করেছে। আজ ৭৬ বছর ফিলিস্তিন স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি যার অন্যতম কারণ আমরা মুসলিম বিশ্ব এক হতে পারিনি। তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইহুদীরা নির্বিচারে নারী-শিশু ফিলিস্তিনীদের হত্যা করছে। আজ বিশ্ব মানবতা কোথায়? কোথায় বিবেকবোধ? ওআইসি কেন এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে পারছে না। আমাদের উচিত সকল মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করা।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, 'আমরা ঘুমাতে পারিনা যখন দেখি ফিলিস্তিনের জনগণকে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। যারা আমাদের বিশ্ব বিবেকের কথা বলে, বিশ্বসভ্যতার কথা বলে কিন্তু সেই সভ্যতা কেন ফিলিস্তিনের পক্ষে কাজ করে না আমরা তার ঘৃণা করি। আজকে আমরা দেখছি ফিলিস্তিন নিজ দেশেই প্রবাসী হয়ে বসবাস করছে। দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল, নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন করতে করতে ফিলিস্তিন বিশ্ব মানচিত্র থেকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিন তার স্বাধীনতা এবং ন্যায্য হিস্যা বুঝেনা পাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বকে একত্রিতভাবে এর প্রতিবাদ করতে হবে।'
আপনার মতামত লিখুন :