রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। সেখানে নেতাকর্মীদের হাতে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের দাঁড়িপাল্লা। এই দৃশ্য সমাবেশে ভিন্ন এক আমেজ এনেছে।
বাংলামোটর, ফার্মগেট থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী জামায়াত নেতাকর্মীদের ঢল অব্যাহত রয়েছে। তাদের হাতে দেখা গেছে বাংলাদেশের পতাকা, জামায়াতে ইসলামীর পতাকাসহ রংবেরংয়ের দাঁড়িপাল্লা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীদেরও ঢল বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা জামায়াতের সমাবেশের দিকে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। এ সমাবেশে বাংলাদেশের পতাকা, দাঁড়িপাল্লা ও জামায়াত ইসলামীর দলীয় পতাকা ছাড়া অন্য দেশের পতাকা, ব্যানার নিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি স্বেচ্ছাসেবকরা কঠোরভাবে নজরদারি করছেন।
আরও দেখা যায়, প্রত্যেক বহরেই বিভিন্ন রঙের দাঁড়িপাল্লা দেখা গেছে। কারো হাতে লাল, কারো হাতে সাদা, আবার অনেকে বিভিন্ন রঙের দাঁড়িপাল্লা নিয়ে সমাবেশের দিকে ছুটছেন।
বাংলামোটরের পরেই রাস্তার ধারে মজনু নামের এক চায়ের দোকানি বলেন, দীর্ঘদিন পরে জামায়াতের এই সমাবেশে দলে দলে লোকজন দেখে ভালো লাগছে। প্রত্যেকটি বহরেই কারো না কারো হাতে বিভিন্ন রঙের দাঁড়িপাল্লা আমাদের নজর কাড়ছে। কেউ লাল রঙের দাঁড়িপাল্লা, কেউ আবার সাদা রঙের, কেউ নীল রঙের, আবার কেউ জামায়াতে ইসলামীর পতাকা পেঁচিয়ে দাঁড়িপাল্লা নিয়ে যাচ্ছেন।
সাত দফা দাবিতে আয়োজিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে ইতোমধ্যে মানুষের ঢল নেমেছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে প্রায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। উদ্যানের বাইরেও অবস্থান করছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।
নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে তাদের দলীয় প্রতীক দাাঁড়িপাল্লা শোভা পাচ্ছে। দাঁড়িপাল্লা ও দলীয় মনোগ্রাম সম্বলিত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি পরে এসেছেন হাজারো নেতাকর্মী।
এদিকে জাতীয় সমাবেশ সফল করতে দায়িত্ব পালন করছেন ২০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক। ভোর থেকে সমাবেশের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন স্পটে স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন।
শনিবার ভোর থেকে হাইকোর্ট এলাকা, মৎস্য ভবন, শাহবাগ এলাকার বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই একই ধরনের ড্রেস পরে বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়েছেন। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করছেন। কোন অঞ্চলের মানুষ কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
মৎস্য ভবন স্পটের স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান মাসুদুর রহমান বলেন, সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। পুরো রাজধানী জুড়ে আমাদের ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছে। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে ভোর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী প্রবেশ করতে দেখা গেছে জামায়াত নেতাকর্মীদের।
সাত দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটির বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে দলটি।
আপনার মতামত লিখুন :