আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় কোরবানির পশু প্রস্তুতিতে তুঙ্গে ব্যস্ততা। উপজেলার খামারিরা এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন ১৫ হাজার ৭৯৮টি পশু, যেখানে স্থানীয় চাহিদা ১২ হাজার ৬১৩টি। চাহিদার চেয়ে ৩ হাজার ১৮৫টি পশু অতিরিক্ত প্রস্তুত হওয়ায় এসব গবাদিপশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাটে শুরু হয়েছে কেনাবেচা। উল্লেখযোগ্য হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফুলবাড়ী পৌর পশুহাট, মাদিলা, আমডুঙ্গি, মেলাবাড়ী, আটপুকুর ও বারাইহাট পশুর হাট। এসব হাটে স্থানীয় খামারিরা গরু নিয়ে আসছেন, আর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা সেগুলো কিনে নিচ্ছেন। পাশাপাশি অনেক খামারি সরাসরি খামার থেকেই বিক্রি করছেন পশু।
সরকারি উদ্যোগে এবার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফুলবাড়ী পশুর হাট’ ও ‘অনলাইন ডিজিটাল পশুর হাট’-এর মাধ্যমে অনলাইন কেনাবেচার সুযোগও রাখা হয়েছে, যাতে ক্রেতারা সহজেই পশু কিনতে পারেন।
ফুলবাড়ীতে বর্তমানে গবাদিপশুর খামারের সংখ্যা ৭০৮টি, যার মধ্যে নিবন্ধিত ৪১টি এবং অনিবন্ধিত ৬৬৭টি। এসব খামারে প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজা করা হ”েছ। খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁচা ঘাস, খৈল, ব্র্যান, ধানের কুঁড়া ও ভুট্টা।
খামারিরা জানান, পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাজার ভালো থাকলে লাভের আশায় তাঁরা আশাবাদী।
স্বজনপুকুর এলাকার আমিন এগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপক মো. ওমর ফারুক জানান, আমাদের ফার্মে ১৯০টি গরু ও দুটি মহিষ রয়েছে। দেশি জাতের পাশাপাশি ব্রাহামা, শাহিওয়াল, হরিয়ানা ও নেপালি জাতের উন্নত গরুও রয়েছে। ছোট আকৃতির গরুর চাহিদা এবার বেশি। আমরা হাটে নিচ্ছি না, খামার থেকেই বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে ২৩টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। দাম ৬০ হাজার থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত।
দৌলতপুর ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া এলাকার খামারি সোবহান আলী জানান, ঈদের জন্য খামারে ছয়টি ষাঁড় গরু প্রস্তুত করেছি। খৈল, ছোলা, গম, ভুসি ও সবুজ ঘাস খাইয়ে এগুলো মোটাতাজা করেছি। বাজার ভালো থাকলে প্রতিটি গরু ২ থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব।
পৌর পশুহাটের ইজারাদার মো. মানিক মন্ডল বলেন, হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য নিরাপত্তা এবং পশু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হাসান জানান, ‘খামারিরা যাতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পশু মোটাতাজা করতে পারেন এবং নিরাপদে বাজারজাত করতে পারেন, সেজন্য আমরা নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি। ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এএম জাবের বিন জব্বার জানান, সীমান্তে কড়া নজরদারি চলছে, সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :