দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় আগাম আমন ধান কাটাই মাড়াই শেষ করেই আগাম আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। গত আলু চাষ মৌসুমে আলুর দাম আশানুরূপ না পেলেও আগামী বছরে লাভের আশায় কৃষকরা কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছেন আলু চাষে।
উপজেলার দৌলতপুর, খয়েরবাড়ী, শিবনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, হলেন্ডার, রোমানা, ক্যারেজ, সাদা ও লাল পাটনাই জাতের আলু আগাম লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য জমি তৈরিসহ সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কৃষকদের মতে ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ৪০ ভাগ জমিতে আগাম আলু লাগানো সম্পন্ন হয়েছে।
খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের জমিদারপাড়া গ্রাামের কৃষক আজিবর সরকার এবার ৭৮ শতক জমিতে আগাম আতের আলু লাগিয়েছেন।
তিনি বলেন, গতবার ধান কাটার পর আগাম ৪০ শতক জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন। এতে কিছুটা আর্থিকভাবে লোকসান গুণতে হলেও আগামীতে লাভবান হবে এমন আশা নিয়ে একই পরিমাণ জমিতে ক্যারেট জাতের আগাম আলু চাষে মনোনিবেশ করেছেন।
দৌলতপুর ইউনিয়নের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত হলেও আলু খেতের তেমন ক্ষতি হয় না। তাই আগাম আলু চাষে কোনো ক্ষেতের কোন ভয় থাকে না। এবার আমি নিজেও আড়াই একর জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন।
এই এলাকার কৃষক গমন চন্দ্র মোহন্ত বলেন, এখানকার মাটিতে সব আবাদ ভালো হয়। আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, ধান, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পটল, বরবটি, মূলা এই ফসলগুলো ভালো হয়। এ সময়ের লাগানো আলু আগাম বাজারে উঠবে, এজন্য বাজারে তখন দামও ভালো পাওয়া যাবে।
উপজেলা শিবনগর ইউনিয়নের বুজরুক সমশেরনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর আলু আবাদ করে লোকসান হলেও আগামীতে ভালো দাম পাওয়া যাবে এবং এতে গত বছরের লোকসান উঠে আসবে এমন আশা নিয়েই তিন বিঘা জমিতে রোমান জাতের আগাম আলু চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আলু চাষ মৌসুমে উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৮৭০ হেক্টর জমি। এরজন্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন। একইভাবে আগাম জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমি। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন আলু। তবে ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৪০ভাগ আগাম আলু চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, এখনো পুরোদমে আগাম জাতের আলু লাগানো শুরু হয়নি। তবে যারা এখন জমিতে আলু লাগাচ্ছেন, তা ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। ইতোমধ্যে উপজেলার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪০ভাগ আগাম আলু লাাগানো হয়ে গেছে। অবশিষ্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাগানো শেষ হয়ে যাবে। মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো পাওয়া যায়। এজন্য কৃষকরা আগাম আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদানে করা হচ্ছে।








































আপনার মতামত লিখুন :