Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আদমদীঘিতে গাছ কাটার মহোৎসব


দৈনিক পরিবার | মিরু হাসান বাপ্পী মে ৪, ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম আদমদীঘিতে গাছ কাটার মহোৎসব

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল। এই বিলে যাওয়ার একমাত্র সড়ক সান্দিড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে। এই সড়কের ধারে রয়েছে সাড়ি সাড়ি বনজ গাছ। যে গাছগুলো কেটে ফেলছে বনবিভাগ। কোন গাছ কাটা হয়েছে, কোনটি মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর এতেই চাপা ক্ষোপ দেখা দিয়েছে স্থানীয় জনগণ সহ ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে। বিলের পাড় ও সড়কে এ সব গাছ বাঁধের কাজ ছাড়া ছায়া দিয়ে যাচ্ছে প্রায় ২০ বছর ধরে। সড়কে ছায়া দেওয়া এসব গাছ কাটার বিরোধিতা করছেন স্থানীয়রা। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ম মাফিক এসব গাছ কাটা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া গ্রাম থেকে রক্তদহ বিল পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারের বেশি সড়কের পাশ ও বিল পাড় দিয়ে প্রায় ১১ শত গাছ কাটার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে কাটা হয়েছে প্রায় চার থেকে পাঁচ শতটি গাছ। গাছগুলোর বেশির ভাগই বনজ গাছ। আদমদীঘি বন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে রোপণ করা প্রায় ১১০০ কাটার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। বন বিভাগের সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় রক্তদহ বিল সংলগ্ন সড়কটির দুপাশের্^ মেহগনি, রেইনট্রি, ইউক্যালিপটাস, অর্জুন, শিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতির এসব গাছ রোপণ করা হয়। বন বিভাগ বলছে, ২০ বছর পূর্ণ হলেই সমাজিক বনায়নের গাছ বিধি অনুযায়ী কাটার বিধান রয়েছে। সেই নিয়ম রক্ষা করতে গিয়ে নম্বর চিহ্নিত করে বিক্রি করার জন্য গত ২০২৩ সালে দরপত্র আহবান করে বন বিভাগ। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে যথাক্রমে মোঃ সহিদুল ইসলাম, আব্দুর মান্নান ও রতন কুমার দেব গাছ কাটার কার্যাদেশ পান।
স্থানীয় বাসিন্দা আছর আলী নামের এক কৃষক বলেন, বন বিভাগ থেকে গাছ কাটছে কাটুক তবে দেখে শুনে বেশি বয়সী গাছ ও মারা যাওয়া গাছ কাটুক। আবার নতুন নতুন গাছ লাগাবে। তবে একবারে সব গাছ কাটায় আমাদের কৃষকদের অসুবিধা আবার এই গরমে গাছের ছায়া ও বাতাসে আমরা স্বত্বি পেতাম। সান্দিড়া গ্রামের কাদের আলী নামের এক জেলে বলেন, এখানে সরকারি গাছগুলো সব কাটা হচ্ছে তবে কোনো গাছ লাগানো হচ্ছে না। আদৌ এখানে কোনো গাছ লাগানো হবে কিনা তার ঠিক নেই। এই গাছগুলো কাটায় আমাদের সব পেশার লোকদেরই অসুবিধা হচ্ছে। এই বিল ও বিলের আশেপাশে প্রায় কয়েকশ কৃষক, জেলে প্রতিদিন কাজ করে যারা এই সড়কের পাশে গাছের ছায়ায় এসে একটু জিড়িয়ে নেয়। গাছ কাটার ফলে রোদের কারণে আমাদের কাজ করতেও অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া যে গাছগুলি চিহ্নিত করা হয়নি, সেগুলিও কাটা হচ্ছে।
তাহমিদ নাফিস দিপ্ত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গাছ আমাদের পরিবেশের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এটি আমাদের সকলেরই জানা। সান্তাহারের সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে একটি এই রক্তদহ বিল পার। তীব্র গরমেও এখানে ছায়া, বাতাস থাকতো সামনে অথৈ পানি। আর এই সৌন্দর্য আরও বুদ্ধি পায় সড়ক ও বিল পাড়ের গাছের কারণে। সেখানে সব গাছ কেটে ফেলে এই এই সৌন্দর্য নষ্ট করছে বন বিভাগ। তা ছাড়া এই গাছগুলি বাঁধের মাটি ধরে রাখার কাজও করে।

Side banner