বেলুচিস্তানের সুরাব শহরে গতকাল শুক্রবার সন্ত্রাসীদের হামলায় এক জেলা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রাদেশিক সরকার। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিনদ এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানোর এক ঘৃণ্য প্রয়াস বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এ ছাড়া একটি ব্যাংক লুট করা হয় এবং একাধিক সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (রাজস্ব) হিদায়াতুল্লাহ বুলেদিও ছিলেন।
রিনদ বলেন, বুলেদি তার বাসভবন রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন। তার এই আত্মত্যাগ নতুন এক সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তিনি জানান, হামলার সময় ওই বাসায় নারী ও শিশুরাও উপস্থিত ছিল।
রিনদ আরো বলেন, ভারত-পৃষ্ঠপোষিত গোষ্ঠীগুলো ভারতের হয়ে এই হামলা চালিয়েছে এবং জানান এলাকাজুড়ে তল্লাশি অভিযান চলছে। আমরা দেশবিরোধী শক্তির সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে বদ্ধপরিকর। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি) ও লেভিস বাহিনী।
ডন নিউজ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিনদ বলেন, জিও-ফেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে হামলাকারীদের খোঁজা হচ্ছে।
ডন ডটকম এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সুরাবের পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এর আগে গত মাসে আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, ভারত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ তীব্র করতে তার ‘অ্যাসেট’ বা মদদপুষ্ট জঙ্গিদের সক্রিয় করেছে।
তিনি বলেন, পেহেলগাম ঘটনার পর, তাদের সন্ত্রাসবাদী নকশার অংশ হিসেবে বেলুচিস্তানে সক্রিয় সব সন্ত্রাসী সংগঠন ফিতনা-আল-খারিজ এবং স্বাধীন জঙ্গি সেল —-কে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আরো অবনতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমাত্রার বিদ্রোহে জড়িত বিদ্রোহীরা এখন আরো ঘন ঘন ও মারাত্মক হামলা চালাচ্ছে। বিশেষ করে নিষিদ্ধঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) নতুন কৌশলে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসে বেলুচিস্তানের সিবি এলাকায় জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাই করে জঙ্গিরা। এতে ২৬ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে ১৮ জন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। অভিযানে আরো ৫ জন নিরাপত্তা সদস্য শহীদ হন। তবে এপ্রিল ২০২৫-এ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতির ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ হয়, কারণ ওই মাসে সন্ত্রাসী হামলা ও এর ফলে হতাহতের সংখ্যা মার্চের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় বলে জানায় পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস)।
২০২৫ সালের গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স অনুযায়ী, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। গত এক বছরে সন্ত্রাসী হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ০৮১ জন।
সূত্র : ডন
আপনার মতামত লিখুন :