সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। তারা হলেন– মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সাবেক সচিব ও বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সদস্য সচিব কাজী মেরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। একই বিবৃতিতে ঐক্য ফোরামের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সচিবালয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ও অসাংবিধানিক ‘কালো আইন’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়সহ সারা দেশে সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম তাদের আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন এবং একাত্মতা ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। তাদের প্রতি সমর্থন জানাতে ঐক্য ফোরামের সিনিয়র কর্মকর্তারা বৈধ পরিচয়পত্র নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই বিধিবহির্ভূত আচরণের জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবের ব্যাখ্যা দাবি করছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিতর্কিত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুদারের অনৈতিক সহযোগিতায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। তারা নিজেদেরকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলের নির্যাতিত ও বঞ্চিত কর্মকর্তা হিসেবে দাবি করলেও, গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী কোনো আন্দোলনে তাদের দেখা যায়নি। হাসিনার শাসনামলে তারা কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা ছাত্র-জনতার পক্ষের কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। অথচ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পরই তারা জুলাই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে বিপথে চালিত করতে শুরু করে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন জনস্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণে উসকানি দেয়। তারা ফ্যাসিস্ট দোসরদের রক্ষা ও পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন অপকৌশল গ্রহণ করে এবং জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আন্তঃক্যাডার ও আন্তঃগোষ্ঠী দ্বন্দ্বকে উস্কানি দিয়ে চলেছে। তাদের অদক্ষতা, পক্ষপাতিত্ব ও স্বজনপ্রীতির কারণে ১০ মাস অতিক্রম করেও সরকার প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তাদের অদক্ষতা এবং দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের ভিতরে ও বাইরে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
আমরা বর্ণচোরা এই তিন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :