কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন এক নারী কর্মচারী। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত রবিবার ওই হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত এক নারী কর্মচারী বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নূরুল আমিন বিপ্লব অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে বিষয়টি অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে সূত্রে জানা যায়, সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির ওই নারী কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক। এতে রাজি না হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিতেন তিনি। একাধিকবার রুমে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার পাশাপাশি মোবাইল ফোনে কুরুচিপূর্ণ বার্তাও পাঠাতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ডাক্তার হেলিশ রঞ্জনের স্ত্রীও বাদীকে হুমকি দেন।
গত ২১ আগস্ট রাতে স্ত্রীকে সামনে রেখে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে বলে ওই নারী কর্মচারিকে নিজের সরকারি কোয়ার্টারে ডেকে নেন ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার। কিন্তু কোয়ার্টারে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী সেখানে নেই। এ সময় ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন উপ-পরিচালক। এরপর ২৬ আগস্ট বিকালে অফিস কক্ষে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার চিৎকারে হাসপাতালের কর্মচারী ও দর্শনার্থীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। তখন তাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ঘটনাটি এড়ানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্ত পরিচালক।
এ বিষয়ে মামলার বাদী এই নারী বলেন, আমি ধর্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি মামলা নেননি। এরপর বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করি এবং আদালত তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে জানতে ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে পরে কথা বলি। আমি এখন বাইরে আছি বলে ফোন রেখে দেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আদালতের আদেশের কপি এখনও থানায় পৌঁছায়নি। কপি পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।
আপনার মতামত লিখুন :