Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় তীব্র তাপপ্রবাহ অনাবৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে গুটি আম


দৈনিক পরিবার | মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম নওগাঁয় তীব্র তাপপ্রবাহ অনাবৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে গুটি আম

নওগাঁয় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ অন্যদিকে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ঝরে পড়ছে আম। বাড়ছে না আমের আকার। বাগানজুড়ে গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এলেও ফলন নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। তারা বলছেন, সেচ দিয়েও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবছর ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় ৫২৫ হেক্টর বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে ১২ দশমিক ৫০ টন হিসেবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৫ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যুমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয় সাপাহার ও পোরশা উপজেলায়।
সাপাহার উপজেলার কয়েকটি আমবাগান ঘুরে দেখা যায়-গাছে ঝুলছে আম্রপালি, বারি ফোর, গৌড়মতি, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, খিরসা, হাড়িভাঙ্গা, হিমসাগর, গোপালভোগ মল্লিকাসহ নানান জাতের আম। গুটি ঝরা ঠেকাতে বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা সেচ ও প্রতিষেধক দিয়েও কাজ হচ্ছে না বলে জানান।
সাপাহার উপজেলার আমচাষি আল মারুফ চৌধুরী বলেন, আমার নিজস্ব ৯ বিঘা জমিতে আম্রপালি জাতের আমের বাগান আছে। মুকুলও ভালো এসেছিল। তবে কয় মাস বৃষ্টি না হওযায় খরায় আমের গুটি পড়ে যাচ্ছে। সেচ ও মেশিন দিয়ে স্প্রে কররে লাভ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, একদিকে সার বিষের দাম বেড়ে গেছে, আবার অনাবৃষ্টির কারণে বাগানে আম ঝরে যাচ্ছে। যেটুকু আম রয়েছে তার পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত আরও ৯-১২ বার কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে করে এই বাগান থেকে সার বিষের খরচ উঠে আসবে কিনা বলা মুশকিল।
উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আরেক আমাচাষি শরীফুল বলেন, এবার আমে যে মুকুল আইছিল তাতে আমরা খুবই খুশি ছিলাম। মুকুলের পর গুটি আসাতে আমরা ভাবছিলাম এবার ফলন ভালো হলে কিছু লাভ করতি পারব। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওযায় গুটি ঝরে পড়ে যাচ্ছে। গাছের গোড়ায় সেচ দিয়েও খুব একটা লাভ হচ্ছে। এইভাবে গুটি ঝড়ে গেলে গাছে তো আম থাকবে না।
একই উপজেলার চাচাহার গ্রামের আমচাষি আলামিন বলেন, বৃষ্টির দেখা না পেলে আমে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বৃষ্টি না হওয়ায় আম গাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে কাজ হচ্ছে না। এরপরও চেষ্টা করছি আমে গুটি টিকিয়ে রাখার জন্য।
পোরশা উপজেলার আমচাষিু মাসুদ রানা বলেন, এবছর গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। আমের গুটি মোটামুটি এসেছে। কিন্তু তীব্র তাদপ্রবাহের কারণে আমে গুটির বোঁটা নরম হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটি স্বাভাবিক কারণে বড় হচ্ছে না। এতে করে আমচাষিসহ বাগান মালিকরা চিন্তায় আছে এখন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা একেএম মঞ্জুরে মাওলা বলেন, যে পরিমাণে তাপপ্রবাহ চলছে তাতে আম ঝড়ে যাবে এইটাই স্বাভাবিক। এইজন্য চাষিদের নিয়মিত গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। তাতে কিছুটা রস ধরে থাকলে গুটি পড়া রোধ হবে। একই সঙ্গে মেশিনের মাধ্যমে সাদা পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ফলন বিপর্যয় বিষয়টি এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।

Side banner