Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২
ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চক্ষু চিকিৎসা শুন্য: ভোগান্তিতে ফুলবাড়ীবাসী


দৈনিক পরিবার | প্লাবন শুভ জুন ২৭, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম চক্ষু চিকিৎসা শুন্য: ভোগান্তিতে ফুলবাড়ীবাসী

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অথচ এখানে নেই কোনো চক্ষু বিশেষজ্ঞ। চোখের সমস্যায় ভোগা মানুষগুলো তাই বাধ্য হচ্ছেন জেলা সদরের হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক কিংবা চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে ছুটতে। এতে অর্থ খরচ বাড়ার পাশাপাশি নানান ধরনের ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বায়ুদূষণ, পানিদূষণ আর মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার চোখের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে নেই কোনো সচেতনতামূলক উদ্যোগ কিংবা চিকিৎসা সেবা। প্রতিদিন অনেক রোগী চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে আসলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা মিলছে না, শুধু অনুমান নির্ভর পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিকেল অফিসার ও স্যাকমোরা (উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার)।
গত ২৬ জুন সকালে চোখ দিয়ে পানি পড়া সমস্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন কাজীহাল ইউনিয়নের মিরপুর জলেশ্বরী গ্রামের আব্দুল মালেক (৫৫)। তিনি বলেন, ‘চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসি, কিন্তু কাউন্টার থেকে জানালো এখানে কোনো চক্ষু চিকিৎসক নেই। এখন বাধ্য হয়েই প্রাইভেট চেম্বারে যেতে হবে।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চোখের চিকিৎসকের পদই নেই, যা এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় বড় এক ঘাটতি তৈরি করেছে। পাশাপাশি আরও উদ্বেগের বিষয় হলো প্রতিষ্ঠানটিতে ৮০ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য। কিছু চিকিৎসক আবার সংযুক্তির নামে অন্যত্র চলে গেছেন, ফলে অস্ত্রোপচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান জানান, এখানে কার্ডিওলজি, চক্ষু, শিশু, গাইনি, সার্জারি, মেডিসিনসহ ১১টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ থাকলেও ৯টি পদই শূন্য। ১৩ জন মেডিকেল অফিসারের জায়গায় আছেন মাত্র ৩ জন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে অ্যানেসথেশিয়া (অজ্ঞানবিদ) না থাকায় এখন আর কোনো ধরনের অপারেশন সম্ভব হচ্ছে না। অথচ আগে প্রতিমাসে ১০ থেকে ১৫টি সফল অস্ত্রোপচার হতো।
তিনি আরও জানান, প্যাথলজি, ইসিজি, থেরাপি ও অন্যান্য পরীক্ষার যন্ত্রপাতি থাকলেও পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান ও বিশেষজ্ঞ না থাকায় নিয়মিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ যেমন পুষ্টিবিদ, থিজিওথেরাপিস্ট, ইসিজি টেকনিশিয়ান শূন্য রয়েছে। চিকিৎসা সংকট দূর করতে বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। বরং অভিযোগ রয়েছে কিছু চিকিৎসক লবিং করে ফুলবাড়ী থেকে অন্যত্র সংযুক্ত হয়ে গেছেন, যা স্বাস্থ্যসেবায় বড় বাধা তৈরি করছে।
ফুলবাড়ীবাসীর দাবি, অবিলম্বে চক্ষু চিকিৎসকসহ অন্যান্য শূন্যপদ পূরণ করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে জনস্বাস্থ্যের এই সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

Side banner