কৃষি কর্মকর্তার কাছে তথ্য চাওয়ায় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিককে অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী’র বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী ।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম মো. মাসুদ রানা। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার রৌমারী উপজেলা সংবাদদাতা হিসাবে কর্মরত আছেন।
সাংবাদিক মো. মাসুদ রানা বলেন, রৌমারী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কাছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (এসএসিপি) প্রকল্পের প্রদর্শনী-বাস্তবায়ন বরাদ্দ, পাটনার প্রকল্পের প্রদর্শনী-বরাদ্দ, পারিবারিক পুষ্টিবাগান প্রকল্পের বরাদ্দ-বীজের তালিকা ও চর প্রকল্পের প্রদর্শনী বাস্তবায়ন ও বরাদ্দর তথ্য জানার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা উপজেলা কৃষি অফিসারের অফিস রুমে যাই। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী’র নিকট ওই প্রকল্পের কথা বলতে শুরু করি কিন্তু তিনি আমার সব কথা না শুনে আকস্মিক উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আপনারা সবাই আমাকে পাগল পাইছেন, কিছুক্ষণ আগেও আসছিলো কয়েকজন আমার সাথে ঝগড়া করতে। আপনি কেনো আসছেন? রুম থেকে চলে যান, আমি কাউকে তথ্য দিতে পারবো না। পারলে জেলার সাথে কথা বলেন। এইরকম কথা শুনে আমি তার অফিস থেকে চলে আসি।
এর আগে ওই কর্মকর্তার কাছে তথ্যের জন্য যান রৌমারী মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মো. সাইফুল ইসলাম ও সাংবাদিক মো. আব্দুল খালেক। তারা বলেন, আমরা দুপুরে কৃষি কর্মকর্তার কাছে গিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রকল্পের তালিকা চাই এবং কৃষকের প্রণোদনায় তালিকায় স্বজন প্রীতির বিষয়ে চাই। এক পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা আমাদেরকে কোনো তথ্য না দিয়ে আমাদের উপর রাগান্বিত হন। ওই কর্মকর্তা বলে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নিয়ে যান, তা ছাড়া আমি তথ্য দিতে পারবো না।
রৌমারী উপজেলার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক মো. সাখায়াত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ওই কৃষি কর্মকর্তা কোনো সাংবাদিককে তথ্য দিতে চান না। সে নিজের ইচ্ছা মতো পছন্দের মানুষ দিয়ে প্রকল্পের কাজগুলো করছে বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই সুবাদে তার কাছে তথ্য চাইতে গেলে সে তথ্য না দিয়ে আমাকে অনেক হয়রানি করেছে। পরে আমি তথ্যর জন্য তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত আমাকে কোন তথ্য দেয়নি এই কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সে আসার আগে কয়েক জন সাংবাদিক আসছিলো তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছে এই নিয়ে আমি টেনশনে ছিলাম। তারা চলে যাওয়ার পরেই সে (দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক) আমার রুমে আসছিলো আমি শুধু তার সঙ্গে একটু জোরে কথা বলছি। আমি তাকে বলছি রুম থেকে চলে যান আমাকে কাজ করতে দেন। আমি তার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, বিষয়টি আমি কিছুই জানি না তবে খোঁজ খবর নিচ্ছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি কুড়িগ্রামের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল আল মামুন বলেন, সাংবাদিক তথ্য নিবে তিনি তা দিয়ে দিবেন। কিন্তু তিনি (কৃষি কর্মকর্তা) দুর্ব্যবহার করবেন কেন? দুর্ব্যবহার করার কোনও সুযোগ নাই। আমি বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব।
আপনার মতামত লিখুন :