‘বাল্যবিয়ে রুখবো, সম্ভাবনার আগামীর গড়বো’ স্লোগানকে সামনে রেখে নীলফামারীর ডোমারে অ্যান্টি চাইল্ড ম্যারিজ অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে ও শিশু অধিকার বিষয়ক কর্মশালা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে শহরের ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতন হলরুমে শিশু অধিকার বিষয়ক সংগঠন 'অ্যান্টি চাইল্ড ম্যারিজ অর্গানাইজেশন'-এর নীলফামারী জেলা শাখার আয়োজনে বাল্যবিয়ে, শিশু অধিকার বিষয়ক কর্মশালা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ নাজমুল আলম বিপিএএ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'বর্তমান সমাজের অন্যতম একটি ব্যাধি হলো বাল্যবিবাহ। অপরিণত বয়সে বিয়ের কারণে অসময়ে গর্ভপাত হয়। যার কারণে একটি মেয়ের সুস্থ্যভাবে বেড়ে ওঠা যেমন হয়না, তেমনি নবজাতকের জন্যও সেটি বিপজ্জনক। এছাড়া মেয়েদের বিয়ের সময় যৌতুক প্রথা বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে মেয়েদেরকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। অনেক পরিবারে যৌতুকের জন্য টাকা জমায়, সেই টাকা যদি মেয়েটির পড়ালেখার পেছনে ব্যয় করে তাহলে সেই বাবা-মায়ের মেয়ে উচ্চ পর্যায়ে যেতে পারবে। পড়াশোনা জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানের কিশোর-কিশোরীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। তবে সেটার সীমাবদ্ধতা রাখতে হবে। আসক্তি জন্মানো যাবেনা। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দুষ্টচক্রের কাছ থেকে প্রত্যেক মেয়েকেই নিরাপদ ও সচেতন থাকতে হবে। আবেগের দুর্বলতা নিয়ে সর্বনাশ যেন কেউ ঘটাতে না পারে, সেজন্য প্রত্যেক মেয়ে, তার পরিবার ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সচেষ্ট ও তৎপর থাকতে হবে।'
ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ডোমার উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ শাফিউল ইসলাম।
এছাড়া অ্যান্টি চাইল্ড ম্যারিজ অর্গানাইজেশনের জেলা শাখার উপদেষ্টা প্রভাষক মোঃ সোলায়মান আলী, ডোমার উপজেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশীদ, এসিএমও'র নীলফামারী জেলা পরিচালক মাহমুদ হাচান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অ্যান্টি চাইল্ড ম্যারিজ অর্গানাইজেশনের জেলা শাখার উপ-পরিচালক সাঈদ বিন ইসলামের সঞ্চালনায় বাল্যবিয়ে ও শিশু অধিকার বিষয়ক কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন- সমাজকর্মী আসমাউল হাসান।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনটির পরিচালক মাহমুদ হাচান বলেন, 'একটি সুস্থ জাতি পেতে প্রয়োজন একজন শিক্ষিত মা। অথচ একুশ শতকে এসেও বাংলাদেশের ৬৬ ভাগ মেয়ে এখনো শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, যার প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ। আগামী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে উঠা এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতেও বাল্যবিবাহ একটি বড় বাঁধা। আমরা যদি সবাই সচেতন হই তাহলে কন্যা শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। দেশে মা ও শিশুর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। তাই বাল্যবিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।'
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে তেলাওয়াত করেন মাহিয়ান আহমেদ। এছাড়া অন্যান্যদের মাঝে এসিএমও'র সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ, সদস্য সুচি প্রামাণিক, জেলা আইটি পরিচালক মুজাহিদ ইসলাম আদিব উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :