Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২

দলের প্রধান নির্বাচিত হলেন নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী অলি


দৈনিক পরিবার | আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম দলের প্রধান নির্বাচিত হলেন নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী অলি

নিজ রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ভোটাভুটিতে আবারও দলের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন জেন-জি আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। বৃহস্পতিবার দলটির সদস্যরা তাকে দলের নেতৃত্বে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। এর ফলে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় দেশটির জাতীয় নির্বাচনে দলের প্রস্তুতির তত্ত্বাবধান করবেন তিনি।
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট-লেনিনিস্টের (সিপিএন-ইউএমএল) সদস্যরা রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের সাধারণ সম্মেলনে ভোটাভুটির মাধ্যমে দলীয় প্রধান নির্বাচন করেছেন। এতে দলের সদস্যদের ভোটে ভূমিধস জয় পেয়েছেন অলি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেন-জি নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের পর ৭৩ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ রাজনীতিক দলির প্রধান নির্বাচিত হলেন। ওই আন্দোলনের মুখে অলির সরকারের পতন ঘটে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
আগামী বছরের মার্চে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় রয়েছে সুশীলা কার্কি নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দলটির প্রচার বিভাগের প্রধান রাজেন্দ্র গৌতম বলেন, দলের প্রধান নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈশ্বর পোখরেলের তুলনায় প্রায় তিন গুণ ভোট পান অলি। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অলি ১ হাজার ৬৬৩ ভোট, আর পোখরেল পেয়েছেন ৫৬৪ ভোট।
কে পি নামে পরিচিত অলি নিজেকে দলের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে ভাবমূর্তি গড়ে তোলার কাজ করছেন। তার কিছু সমাবেশে ‘কেপি বা (বাবা), আমরা তোমাকে ভালোবাসি’ লেখা পোস্টার ও ব্যানার দেখা গেছে।
রাজেন্দ্র গৌতম বলেন, আমি খুশি যে তিনি জিতেছেন। পশ্চিম নেপালের গণ্ডকি প্রদেশ থেকে সম্মেলনে অংশ নিতে আসা ৪৫ বছর বয়সী তারা মায়া থাপা মাগার বলেন, এই মুহূর্তে জাতির জন্য তিনিই প্রয়োজন।
সমৃদ্ধ দেশ গড়ার অঙ্গীকার
সেপ্টেম্বরের বিক্ষোভে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা কে পি অলির বাসভবন, সংসদ ভবন ও আদালত-সহ শত শত স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেন। এর কিছুদিন পরই চারবারের প্রধানমন্ত্রী অলি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে অলি লেখেন, তার সরে দাঁড়ানো ‘রাজনৈতিক সমাধান ও সমস্যার নিষ্পত্তির পথে সহায়ক হবে’ বলে তিনি আশা করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর সরকারের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদ থেকে শুরু হওয়া ওই আন্দোলনে অন্তত ৭৭ জন নিহত হন। দেশটিতে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে।
মাগার বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তা আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের ফল। অলির নেতৃত্বেই আমরা এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারি।
অলির ক্ষমতাচ্যুতির পর ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি ৫ মার্চের নির্বাচন পর্যন্ত হিমালয় অঞ্চলের দেশটির নেতৃত্ব দেবেন।
বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী দমন-পীড়নে অলির ভূমিকা তদন্তে একটি সরকারি কমিশন কাজ করছে। এ কারণে অলিসহ আরও কয়েকজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
নেপালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের গভীর অবিশ্বাস বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কার্কি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য ‘ন্যায়সঙ্গত ও ভয়মুক্ত’ পরিবেশ নিশ্চিত করবেন।
সূত্র: এএফপি।

Side banner