Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে সামরিক ব্যয়ে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র


দৈনিক পরিবার | আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ০৭:২০ এএম বিশ্বে সামরিক ব্যয়ে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বজুড়ে গত বছর সামরিক ব্যয় ৬.৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বের সব ভৌগোলিক অঞ্চলে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সুইডেনের স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। খবর ডয়চে ভেলে।
সিপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ খরচ করে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর দেশটি ৯১৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এরপরে এ তালিকায় রয়েছে চীনের নাম। চীনরে সামরিক ব্যয় ২৯৬ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মোট ব্যয়ের ১২ শতাংশ। রাশিয়ার সামরিক বয় ১০৯ বিলিয়ন ডলার। যা বিশ্বের মোট ব্যয়ের ৪.৫ শতাংশ। এরপরে রয়েছে ভারত (৮৩.৬ বিলিয়ন ডলার, ৩.৪ শতাংশ) এবং সৌদি আরব (৭৫.৮ বিলিয়ন ডলার, ৩.১ শতাংশ)।
এছাড়া একই সময়ে যুক্তরাজ্য ব্যয় করেছে ৭৪.৯ বিলিয়ন, জার্মানি ৬৬.৮ বিলিয়ন, ইউক্রেন ৬৪.৮ বিলিয়ন, ফ্রান্স ৬১.৩ বিলিয়ন, জাপান ৫০.২ বিলিয়ন, ইসরায়েল ২৭.৫ বিলিয়ন ও পাকিস্তান ৮.৫ বিলিয়ন ডলার।
পাশাপাশি ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া, ওশেনিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ সব অঞ্চলেই সামরিক ব্যয় বেড়েছে। শতাংশের হিসেবে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি সামরিক ব্যয় বেড়েছে ডিআর কঙ্গোতে (১০৫ শতাংশ)। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়ছে দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।
সিপ্রির গবেষক চিয়াও লিয়াং বলেন, মেক্সিকো ও এল সালভেদরে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গ্যাং সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়তে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইকুয়েডর ও ব্রাজিলেও একই ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে বলেও জানান এই গবেষেক।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ : ২০২৩ সালে সামরিক খাতে ৬৪.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইউক্রেন। যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। তবে দেশটি ২০২৩ সালে সামরিক সহায়তা পেয়েছে ৩৫ বিলিয়ন ডলার। ফলে সবমিলিয়ে ইউক্রেন গত বছর সামরিক খাতে খরচ করেছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ১০৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে রাশিয়া।
তবে জিডিপির হিসেবে দেখা যায়, জিডিপির ৩৭ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ইউক্রেন। সেই তুলনায় রাশিয়ার ব্যয় হয়েছে ৫.৯ শতাংশ। ফলে ‘যুদ্ধটা রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেনের ওপর বেশি বোঝা হয়ে উঠেছে, বলে মন্তব্য করেন লিয়াং।
চীন-তাইওয়ান সংকট : দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনার কারণে ২০২৩ সালে সামরিক ব্যয় বেড়েছে চীনে। চীন তার খরচ আগের বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বাড়িয়ে ২৯৬ বিলিয়ন ডলার করেছে। এশিয়া ও ওশেনিয়া এলাকার মোট সামরিক ব্যয়ের অর্ধেক করেছে চীন।
সিপ্রির গবেষক লিয়াং বলেন, পিপলস লিবারেশন আর্মিকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে চীন। এছাড়া চীন সামরিক ব্যয় বাড়ানোয় জাপান, তাইওয়ান ও ভারতও সামরিক বাজেট বাড়িয়েছে বলে মনে করেন এই গবেষক। সামরিক বাজেট ১১ শতাংশ বাড়িয়েছে জাপান (৫০.২ বিলিয়ন ডলার) ও তাইওয়ান (১৬.৬ বিলিয়ন ডলার)।
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নিকলাস শ্যোরনিগ বলেন, আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যখন সামরিক নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাচ্ছে এবং নিরাপত্তা ইস্যুটি সামরিক কাঠামোর ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে। সেই অর্থে সংখ্যাগুলো ওই মানসিকতার প্রতিফলন মাত্র।
ইউক্রেন যুদ্ধ, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলে ইরানের হামলা, ইরানে ইসরায়েলের হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। যেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কারণ বেশিরভাগ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি সেকেলে বা আর কার্যকর হচ্ছে না। বর্তমান সময়ে হামলা চালানোর চেয়ে প্রতিরক্ষার বিষয়টি বেশি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

Side banner