বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টাসহ তিন উপদেষ্টাকে বহিষ্কার করলে অন্তর্বর্তী সরকারে ন্যূনতম স্বচ্ছতা আসবে। সেটি করা না হলে এ সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। রবিবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের উদ্যোগে ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দ্রুত নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলো শেখ হাসিনার পতন চেয়েছে একটিমাত্র কারণে, তা হচ্ছে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য। এটি ছিল গত ১৫ বছরের লড়াই। সেই লড়াইয়ের পর শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এখন সেই গণতান্ত্রিক উত্তরণ দরকার, উত্তরণ মানে নির্বাচন।
এ প্রসঙ্গে সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা বলাই যেন এখন অপরাধ। বিএনপি যমুনায় গিয়ে স্পষ্ট করে বলে এসেছে, সরকারের স্বচ্ছতার জন্য যারা নতুন পার্টি করেছে তাদের কোনো প্রতিনিধি এ সরকারে থাকতে পারবে না। দুজনের কথা সরাসরি বলেছে। আরেকজন আছে যে বাংলাদেশকে বিক্রি করতে চায়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মিডিয়ায় দেখলাম পরকীয়ার কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করে পরে স্বামীও আত্মহত্যা করেছে। যার কারণে এটি করেছে তিনি এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। এ ঘটনায় ৩০ বছর আগে সে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে বিদেশ থেকে এনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিএনপি তাকেও বহিষ্কারের কথা বলেছে। এই তিনজনকে বহিষ্কার করলে মিনিমাম স্বচ্ছতা আসবে। আর যদি বহিষ্কার করা না হয় তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনি প্রমাণ করেছেন এনসিপি আপনার দল। আপনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে, ডেমোক্রেসির জন্য নয়। আপনি গণতন্ত্র বোঝেন না এটি আমরা বুঝি। আপনি যদি ওই তিনজন উপদেষ্টাকে বহিষ্কার না করেন তাহলে আমরা ধরে নেবো আপনি একটি দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনার অধীনে ভালো একটি নির্বাচন হবে এটি বিশ্বাস করা আমাদের জন্য কঠিন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, নির্বাচন এখন খুব জরুরি। দেশে গণতন্ত্রের জন্য এই সরকারের স্বচ্ছতার জন্য দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন, জনমনে সন্দেহ দূর করেন। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেন। তা না করলে দেশের যে পরিস্থিতি হবে তার সম্পূর্ণ দায়ভার আপনাকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের পাশে আছি। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই না। আপনি নাহিদের (এনসিপি নেতা) সঙ্গে বসে নিজে নিজে পদত্যাগ চাইবেন, এসব ছেলেমানুষি আপনাকে মানায় না। আপনি দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যান আমরা এটি প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, তাঁতিদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফা সুলতানা রুমা, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :