Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজ করতে যাচ্ছেন


দৈনিক পরিবার | ধর্ম ডেস্ক জুন ৩, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজ করতে যাচ্ছেন

আগামীকাল বুধবার থেকে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। গত শুক্রবার সৌদি আরব সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ১৩ লাখের বেশি হজযাত্রী মক্কা নগরে পৌঁছেছেন। কোন দেশ থেকে কতজন হজে অংশ নিতে পারবেন, সেই কোটা নির্ধারণ করে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি দেশের হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করা হয়। সংস্থাটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেকোনো দেশের প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১ হাজার ব্যক্তি হজে যেতে পারবেন। যেসব দেশ থেকে বেশি হজযাত্রী সৌদি আরবে হজ করতে যান, তার একটি তালিকা তৈরি করেছে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড পপুলেশেন রিভিউ। সেই তালিকা অনুযায়ী দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী যান।
ইন্দোনেশিয়া
জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৮ কোটি। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ মুসলিম। প্রতিবছর ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ হজ করার সুযোগ পান। এবারও হজযাত্রীদের শীর্ষে রয়েছে এশিয়ার দেশটি। এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ২১ হাজার মানুষকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তান
হজযাত্রীর সংখ্যার দিকে থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে এশিয়ার আরেকটি দেশ পাকিস্তান। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২৫ কোটির কিছু বেশি। এ বছর পাকিস্তান থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষের পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ভারত
এশিয়ার দেশ ভারত হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র। তবে হজযাত্রীদের দিক দিয়ে ভারতের অবস্থান তৃতীয়। কারণ, ভারতে ২০ কোটির বেশি মুসলিম বসবাস করেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ। ২০২৫ সালে ভারত থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৫ জন হজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
বাংলাদেশ
হজযাত্রীদের সংখ্যায় ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। এর মধ্যে চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।
নাইজেরিয়া
আফ্রিকা মহাদেশের দেশ নাইজেরিয়া। এটি আফ্রিকার সর্বাধিক জনবহুল দেশ। দেশটিতে অন্তত ১০ কোটি মুসলমান বসবাস করেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের মতো। এ বছর নাইজেরিয়ার ৯৫ হাজার ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ হজের অনুমতি পেয়েছেন।
ইরান
হাজিদের সংখ্যায় ষষ্ঠ অবস্থানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান। শিয়াপ্রধান দেশটির সঙ্গে সৌদি আরবের একধরনের মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব রয়েছে। তবে প্রতিবছরের মতো এ বছরও ইরান থেকে বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবে হজ করতে যাচ্ছেন। ইরানে ৮ কোটি মুসলিম বসবাস করেন। তথ্য অনুযায়ী, ইরান থেকে এবার ৮৭ হাজার ৫৫০ জন হজ করার অনুমতি পেয়েছেন। দেশটি কয়েক বছর ধরেই হজযাত্রীদের কোটা বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে।
আলজেরিয়া
ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়া। দেশটি একসময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। এ দেশের মোট জনসংখ্যা চার কোটির বেশি। দেশটির জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশ মুসলিম। জনসংখ্যার হিসাবে আলজেরিয়া থেকে এ বছর ৪১ হাজার ৩০০ ধর্মপ্রাণ মুসলিম হজের সুযোগ পেয়েছেন। আলজেরিয়ার সঙ্গে সৌদি আরবের ভাষা ও সাংস্কৃতিক মিল রয়েছে।
তুরস্ক
ভৌগোলিকভাবে এশিয়া ও ইউরোপ এই দুই মহাদেশে পড়েছে তুরস্ক। বসফরাস প্রণালির মাধ্যমে এশিয়া ও ইউরোপকে পৃথক করা হয়েছে। তুরস্ক একসময় অটোমান সাম্রাজ্যের (ওসমানীয় সাম্রাজ্য) অধীন ছিল, যা ছিল বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী ও প্রভাবশালী মুসলিম সাম্রাজ্য। প্রায় ৬০০ বছর ধরে তিনটি মহাদেশে অটোমান সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। তুরস্কের মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট কোটি। সে তুলনায় তুরস্ক থেকে অনেক কম হাজি পবিত্র হজ পালন করতে যান। এ বছর তুরস্ক থেকে ৩৭ হাজার ৭৭০ জন হজ করার অনুমতি পেয়েছেন।
মিসর
আফ্রিকার দেশ মিসর। ইসলামের ইতিহাসে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। একসময় শিয়াপন্থী ফাতিমি খিলাফতের রাজধানী ছিল মিসর। মিসর থেকে উত্তর আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। দেশটিতে ১১ কোটি মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই মুসলিম। ২০২৫ সালে হজের জন্য মিসরের নির্ধারিত কোটা ৩৫ হাজার ৩৭৫ জন। এর বাইরে মিসরের বিপুলসংখ্যক মানুষ হজ গাইড ও দোভাষী হিসেবে কাজ করেন।
সুদান
যেসব দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি মুসলিম পবিত্র হজ পালন করতে যান, সেগুলোর মধ্যে সুদানের অবস্থান দশম। যুদ্ধকবলিত আফ্রিকার এ দেশের মোট জনসংখ্যা সাড়ে পাঁচ কোটির মতো। চলতি বছরে সুদানের জন্য হাজিদের নির্ধারিত কোটা ৩২ হাজার।

Side banner