কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর বিভন্ন গরুর হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। হাটজুড়ে গরুর ডাক, দামদর আর দর-কষাকষির মাঝেই উত্তরার দিয়াবাড়ি গরু-ছাগলের হাটে অন্যরকম চাঞ্চল্য তৈরি করেছে বিখ্যাত মীর কাদিমের ‘পিংক কালারের গরু’। পুরু স্বাস্থ্য ও ব্যতিক্রমী রঙের জন্য গরুটি এরই মধ্যে শত শত মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। হাটে যারা আসছেন তাদের অনেকেই কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করছেন ‘এটা কি রঙ করা?’
বুধবার (৪ জুন) দিয়াবাড়ি হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো হাটজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বাঁশ, ত্রিপল, কাদা মাটি পরিষ্কার, পানির ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসছেন হাটে পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে। এর মাঝেই চোখে পড়ল মীর কাদিমের সেই বিখ্যাত গরুটি যার গায়ের রঙ সাধারণ বাদামি বা সাদার পরিবর্তে হালকা গোলাপি।
এই পশুর মালিক উজ্জ্বল হোসেন জানান, রাজবাড়ীর পাংশা থেকে আনা এই গরুগুলো নিজস্ব খামারে বড় হয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে। এর গায়ের রঙ এমনভাবে গোলাপি হয়েছে, অনেকেই প্রথমে দেখে অবাক হয়ে যান। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে, রঙ করা কি না।
তিনি বলেন, এই বছর আমি মোট পাঁচটি বিশেষভাবে লালন-পালন করা গরু নিয়ে হাটে এসেছি। প্রতিটি গরুই আমার নিজ খামারের, কোনো প্রকার স্টেরয়েড বা কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করিনি। আকার, ওজন আর শারীরিক গঠনের ভিত্তিতে গরুগুলোর দাম ৫ লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ধরা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে গোলাপি রঙের বড় গরুটি। এর ওজন প্রায় ৩০ মণের কাছাকাছি, আর দাম চাওয়া হচ্ছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। অন্য গরুগুলো আকারে একটু ছোট হলেও স্বাস্থ্য ভালো, দামও তুলনামূলক কম প্রায় ৫ লাখের মতো।
মীর কাদিমের আরও কয়েকটি গরু নিয়ে আসা আরেক বেপারী মিরাজ হাওলাদার বলেন, গরুর আকার ও আকৃতিভেদে দাম ধরা হয়েছে। সর্বনিম্ন মাঝারি থেকে বড় ধরণের গরু ৪ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে। তবে এখনও কেউ কাঙ্খিত দাম বলেননি। তবে তিনি আশাবাদী, ঈদের আগেই ভালো মূল্যে বিক্রি হবে।
অন্যদিকে, দিয়াবাড়ি হাটের সার্বিক চিত্রও বেশ ইতিবাচক। বিক্রেতারা বলছেন, এবার কোরবানির পশুর সরবরাহ তুলনামূলক ভালো। তবে বৃষ্টি ও কাদার কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও হাট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরে রেখেছে।
হাটের একজন ব্যবস্থাপক জানান, আমরা প্রতিদিন হাট পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছি। ক্রেতা যেন ভালোভাবে গরু কিনতে পারেন, সেজন্য পর্যাপ্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই বলছেন, এবার গরুর দাম কিছুটা বেশি হলেও সাইজ, স্বাস্থ্য ও গঠন অনুযায়ী তা মেনে নেওয়া যায়। তবে কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে দরদামে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ক্রেতা।
আপনার মতামত লিখুন :