Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২

ফিলিস্তিনের যে কবরস্থানে শায়িত আছেন অসংখ্য সাহাবি


দৈনিক পরিবার | ধর্ম ডেস্ক নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম ফিলিস্তিনের যে কবরস্থানে শায়িত আছেন অসংখ্য সাহাবি

ফিলিস্তিনের জেরুজালেম শহরে রয়েছে প্রায় ১,৪০০ বছর পুরনো বাবুর রহমান কবরস্থান। এই কবরস্থানটি জেরুজালেমের প্রাচীনতম ইসলামী কবরস্থান হিসেবে পরিচিত। কবরস্থানটি আল-আকসা মসজিদের পূর্ব প্রাচীরের পাশে অবস্থিত এবং বাবুল আসবাত থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণে উমাইয়া প্রাসাদ পর্যন্ত বিস্তৃত। ফিলিস্তিন এবং মুসলিম বিশ্বের বিজয়ের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা অসংখ্য সাহাবি ও মুজাহিদ সমাহিত আছেন এই কবরস্থানে।
এখানে সমাহিত সাহাবিদের মধ্যে অন্যতম হলেন জেরুজালেম বিজয়ে অংশ নেওয়া হজরত উবাদা ইবনুস সামিত (রা.) ও শাদ্দাদ ইবন আওস (রা.)।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঐতিহাসিক এই কবরস্থানের কবর ও সমাধিফলকে ভাঙচুর চালিয়েছে একদল ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটি একে ‘নতুন ইহুদিকরণ অপরাধ’ আখ্যা দিয়েছে এবং এই ঘটনাকে জেরুজালেমের ইসলামী পরিচয় মুছে ফেলার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ বলে উল্লেখ করেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ইসরায়েলি দখলদারদের এই ন্যক্কারজনক হামলা জেরুজালেমের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক পরিচয় বিকৃত করার অপচেষ্টা। এটি মুসলিম ও খ্রিস্টান ঐতিহ্যের ওপর সরাসরি আঘাত।
দখলদারদের নোংরা আগ্রাসন বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
ফিলিস্তিনের উচ্চ ফতোয়া পরিষদও কবরস্থানে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, বাবুর রহমান কবরস্থানের কবর ভাঙচুর মৃতদের মর্যাদার ওপর আঘাত, আর এটি জীবিতদের মর্যাদাকেও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
পরিষদ বলেছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু ধর্মীয় নীতির পরিপন্থী নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক মূল্যবোধেরও লঙ্ঘন। তাদের মতে, কবরস্থানটি একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়াকফ সম্পত্তি, এখানে অনেক সাহাবি ও ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সমাধি রয়েছে। 
পরিষদ আরও অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে এ কবরস্থানের পরিচিতি মুছে ফেলতে চায় এবং এর একটি অংশকে ‘তোরা পার্কে’ রূপান্তরের চেষ্টা করছে, যা জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সেখানে লাশ দাফনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কবরস্থানের চারপাশে লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে এবং এর ভেতরে নিয়মিত খনন কাজ চালানো হচ্ছে। এসব পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পুরোনো শহরের চেহারা বদলে দিতে ‘তেলফেরিক প্রকল্প’ নামের একটি পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ফিলিস্তিনিরা বলছেন, দখলদার বাহিনী শুধু জীবিতদের নয়, মৃতদের প্রতিও সম্মান দেখাচ্ছে না, বাবুর রহমান কবরস্থানের ঘটনা তাদের নৃশংসতার প্রমাণ।
সূত্র : আল-জাজিরা মুবাশির

Side banner