Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন বাঞ্ছারামপুরের অ্যাড. মীর হালিম


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন বাঞ্ছারামপুরের অ্যাড. মীর হালিম

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পাবলিক পলিসি অ্যানালিস্ট অ্যাডভোকেট আ: হালিম, যিনি লেখালেখির জগতে মীর হালিম নামে পরিচিত, সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল (এএজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী ইউনিয়নের খাউরপুর গ্রামে পিতা মীর আব্দুর রশিদ ও মাতা হোসনে আরা বেগমের ঘরে ১৯৮৭ সালে তাঁর জন্ম। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে মেধার স্বাক্ষর রেখে পৌঁছে যান প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা থেকে এই প্রথম তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হলেন।
নিয়োগ পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় মীর হালিম. বলেন “সংবিধান সমুন্নত রাখা ও রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা আমার অঙ্গীকার। আমার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার কারণে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, আমি সততা ও কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এই পদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে চাই।” 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী আইন বিভাগ থেকে তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে ২০০৭ সালে এলএল.বি. (অনার্স) এবং ২০০৮ সালে এলএল.এম. বা মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। 
আইনের পাশাপাশি “পাবলিক পলিসি অ্যানালাইসিস”  বা জননীতি বিশ্লেষণেও তাঁর বিশেষ আগ্রহ ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইজিএম) থেকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিংগাপুর (এনইউএস)-এর লি কুয়ান ইউ স্কুল অফ পাবলিক পলিসি থেকে একই বিষয়ে আরও উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। বর্তমানে তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্স এন্ড পলিটিক্যাল স্টাডিজ (এলএসই) থেকে একই বিষয়ে একটি অনলাইন কোর্সে পড়াশোনা করছেন। এছাড়া, দেশে-বিদেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে তিনি পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য নানা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইজিএম) এ “রাইজ টু লিড: ডেভেলাপিং ফিউচার লিডারশিপ”  বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণরত থাকা অবস্থায় তিনি এই নিয়োগের খবর পান। 
আইন পেশার প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে তিনি জুডিশিয়ারিতে যোগদান না করে শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পরপরই আইন পেশার সাথে শিক্ষানবিশ হিসেবে যুক্ত হন। ২০০৯ সালে অ্যাডভোকেট হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হন এবং তিনি ঢাকা বার এসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে আইন পেশায় তাঁর যাত্রা শুরু করেন। পুরান ঢাকায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্বর্গবাসী বিজ্ঞ আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবদাস সমদ্দারের পিউপিলেজশীপে তাঁর প্র্যাকটিস শুরু হয়। ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিসের অনুমতি লাভ করেন এবং সেখানে সিনিয়রদের সাথে কাজ শুরু করেন। লিটিগেশন এবং কর্পোরেট চেম্বারে কাজ করার মাধ্যমে তিনি আইন পেশার বহুমুখী দিক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দেশী-বিদেশী বহু মক্কেলকে উপদেশ প্রদান ও মামলা পরিচালনাসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা, প্যানেল আইনজীবী ও পাবলিক লিস্টেড কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। 
তিনি বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও জ্ঞান বিতরণ করছেন। তাঁর গবেষণামূলক ও বিশ্লেষণধর্মী লেখালেখি জাতীয় পত্র পত্রিকা, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে।
রাজনীতির আতুরঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হল শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বর্তমানে পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর সহযোগী পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একজন সদস্য হিসেবে সক্রিয়। এছাড়াও তিনি ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ) এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এর সঙ্গেও যুক্ত আছেন। বিগত দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আদালতে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় বিনামূল্যে সহায়তা করেছেন। তিনি  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রেখেছেন। দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে থাকায় সর্বশ্রেণীর মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন। 
আইন পেশার বাইরেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে একজন মানবিক আইনজীবী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ঢাকার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতি, ঢাকার দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ আইন সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এল.এল. এম ল’ইয়ার্স এসোসিয়েশন (ডুলা) এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য। 
ইতিমধ্যে পেশাগত ও ব্যক্তিগত কারণে তিনি ভারত, মালয়েশিয়া ও সিংগাপুর ভ্রমণ করেছেন। 
ব্যক্তিগত জীবনে মীর হালিম দুই কন্যা সন্তান,  স্ত্রী,বাবা, মা, ভাই বোন নিয়ে একান্নবর্তী পরিবারে সুখি জীবন যাপন করছেন। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি উনার স্ত্রী ডা. তাসলিমা ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সমাজ সেবায় যুক্ত আছেন। 
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি সততার সাথে সবসময় এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিনামূল্যে, স্বল্পমূল্যে ও যৌক্তিক মূল্যে আইনগত সেবা দিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ ও মামলা পরিচালনা করেছেন। এখন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্বও নিরপেক্ষভাবে পালন করে এলাকার গুণী সন্তানদের পথ অনুসরণ করবেন বলে তারা আশাবাদী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা থেকে এই প্রথম তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হওয়ায় সেখানে আনন্দের আমেজ, শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টি বিতরণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দন বার্তা জানাতে দেখা গেছে। শুভাকাঙ্ক্ষী ও স্থানীয়রা তার নতুন পথচলায় সফলতা কামনা করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে তিনি আইন ও ন্যায়ের পথে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাবেন।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেজর এসএম সাইদুল ইসলাম পিএসসি (অব) বলেন বাঞ্ছারামপুর থেকে এই প্রথমবারের মতো এই এএজি নিয়োগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত, আমরা আনন্দিত। 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন অ্যাডভোকেট মীর হালিমের এই নিয়োগে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী আনন্দিত! আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ বাঞ্ছারামপুরের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক সংসদ সদস্য এমএ খালেক পিএসসি বলেন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গী অ্যাডভোকেট মীর হালিম এএজি নিয়োগ পাওয়ায় আমরা বাঞ্ছারামপুর বাসী ধন্য ও গর্বিত, আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
নবনিযুক্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল (এএজি) মীর হালিম তাঁর এই অর্জনের জন্য পিতা-মাতা, মেন্টর, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, বিজ্ঞ সিনিয়র, সহকর্মী, গাইড, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সাংবাদিক, শুভাকাঙ্খী, পরিবার ও এলাকাবাসীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রতিশ্রুতিকে আরো শক্তিশালী করতে তিনি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।

Side banner