আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো রংপুরেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। গ্রামগঞ্জ-হাট বাজার সর্বত্রই প্রচার চালাচ্ছেন তারা। সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না দিলেও অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। নিবন্ধন হারানো দলটি রংপুরের আট উপজেলার মধ্যে ৬ উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। কাউনিয়া ও তারাগঞ্জ উপজেলায় তারা কোনো প্রার্থী দেবে না।
এর মধ্যে মিঠাপুকুর উপজেলায় জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, পীরগাছা উপজেলায় রংপুর মহানগর কমিটির আমির এটিএম আজম খান, পীরগঞ্জে মাওলানা নুরুল আমিন, রংপুর সদরে আব্দুল গনি, বদরগঞ্জে মেনহাজুল ইসলাম ও গঙ্গাচড়ায় রায়হান সিরাজাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর মিঠাপুকুরে ৩ জন, পীরগঞ্জে ৩ জন গঙ্গাচড়ায় ৩ জন, পীরগঞ্জে ও সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাদে দুজন করে এবং বদরগঞ্জে ১ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলটির নেতারা প্রচার করছেন।
অন্যদিকে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও জামায়াতের প্রার্থীকে তারা মৌন সমর্থন দেবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এক্ষেত্রে বিপাকে পড়তে পারেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, রংপুরের মিঠাপুকুর, পীরগাছা, গঙ্গাচড়া ও বদরগঞ্জ উপজেলায় নিবন্ধন হারানো দলটির ভোট ব্যাংক রয়েছে। সেখানে দলটির প্রার্থীরা ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ানো পারেন।
জানা যায়, গত উপজেলা নির্বাচনে শুধু পীরগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির দখলে ছিল। বাকি ৭টি উপজেলায় চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন।
এবারের উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। তারা ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন। তবে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা পোস্টার সাঁটিয়ে দোয়া চেয়েছেন।
রংপুর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির আবারও তৎপর হচ্ছে। বিষয়টি হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে।
রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা এনামুল হক বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের অংশগ্রহণ করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে আমরা প্রার্থী নির্ধারণ করে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামায়াতের প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন বলে আশা করছি।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, আমাদের দল উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালন করব। কেউ সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে দল অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে অন্য কোনো দলের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আপনার মতামত লিখুন :