Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ইক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্রের মাঠ দখল করে অবৈধ মাটি ব্যবসা


দৈনিক পরিবার | শাহীন সোহেল এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ০২:৪১ পিএম ইক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্রের মাঠ দখল করে অবৈধ মাটি ব্যবসা

যশোরের চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে চলা কবতক্ষ নদ খনন করে রাখা পাড়ের মিশ্রিত মাটি বালি সমান করার নামে অবৈধ ভাবে কেটে নিয়েছেন মাটি বালু ব্যবসায়ী তোতা খান। সরকারি তহবিলের অর্থ দিয়ে নদী খনন কাজের ঠিকাদারদের চাপে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রকাশ্যে ভূমি ব্যবস্থাপনা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছেন তোতা খান। ভেকু মেশিন বসিয়ে ৮ থেকে ১০টি ট্র্যাক্টর যোগে দিনরাত মাটি উত্তোলন করে গচ্ছিত রাখা হয়েছে মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের অধীনে থাকা শিশুতলা ইক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্রের খোলা মাঠে। এলাকাবাসীর কিছু দালাল চক্রের সহযোগিতার মাধ্যমে তিনি এ অবৈধ কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, সরকারের টাকায় সরকারি নদীর মাটি কাঁটছে তাহলে ব্যবসাদার কিভাবে মাটি নিয়ে যাচ্ছে? আইনের লোকজন কি করছে? আমাদের রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ধূলোয় আমরা চলাচল করতে পারছি না। গ্রামের ভিতর দিয়ে মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় শিশু ও বয়স্ক পথচারীরা যে কোন সময় দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে।
এই বিষয়ে চৌগাছা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস মুঠো ফোনের মাধ্যমে বলেন, বেশ কয়েকদিন ঈদের ছুটিতে ছিলাম। ছুটি কাটিয়ে এসেছি মাত্র। বিষয়টি আমি শুনেছি যে হাকিমপুর ইউনিয়নের চাকলা কোমরপুরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কবতক্ষের পাড়ের মিশ্রিত বালি মাটি অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে। পরে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে মাটিকাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, মৃত আনসার খানের ছেলে অবৈধ বালি মাটি ব্যবসায়ী তোতা খান (৩৫) এর বাড়ি ঝিনাইদাহ কালীগঞ্জের তিলোচাঁদপুর ইউনিয়নের ধলাথদাদপুর গ্রামে। অবৈধ বালির ব্যবসায়ী তোতা খান বেশ নিজের এলাকায় বালি মাটি ব্যবসা করেন। এবার যেন খোলস ছেড়ে বাহিরে বেরিয়ে এসেছেন তোতা খান। নিজ জেলা উপজেলা ছেড়ে পাশে যশোরের চৌগাছা উপজেলায় অবৈধভাবে মাটি ব্যবসা শুরু করেছেন কবতক্ষের মিশ্রিত মাটি বালি উত্তোলন করে। এতে বিলীন হচ্ছে কবতাক্ষ নদ ও নদীর পাড়ের মাটি। ধ্বংস হচ্ছে সরকারি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প, হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। এদিকে শিশুতলা ইক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্র মাঠে মাটি বালি গচ্ছিত রাখা বিষয়ে কথা বলতে গেলে দালাল চক্রের সদস্য কুদ্দুস বলেন, আমরা মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের প্রেসিডেন্ট গোলাম রসূলের কাছ থেকে পারমিশন নিয়েছি।
সত্যতা যাচাই করতে জানতে গেলে শিশুতলা ইক্ষু সংগ্রহ কেন্দ্রের সি আই মাসুদ রানা বলেন, আমি ঈদুল ফিতরের উপলক্ষে ঈদের কয়েকদিন আগে জামালপুর গ্রামের বাড়ি ছুটিতে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি সেন্টারে মাঠে মাটি বালি রাখা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি তাদের বাধা দিই এবং গাড়ি আটকে রেখে দিয়ে মোবারকগঞ্জ সুগার মিল প্রেসিডেন্টের বিষয়টা জানাই। জবাবে গোলাম রসূল আমাকে জানান তাদেরকে পারমিশন দেয়া হয়েছে। তখন আমি নিরুপায় হয়ে গাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।
এ বিষয়ে মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিলের জায়গায় মিশ্রিত মাটি বালি রাখার কোন পারমিশন দেয়ার এখতিয়ার নেই সুগার মিলের প্রেসিডেন্ট গোলাম রসূল সাহেবের। তিনি আরও বলেন, যদি কখনও কেউ কোন জিনিস রাখতে চায়, তাহলে আমাদের মিল কর্তৃপক্ষের কার্যালয় আবেদন করলে তাদের পারমিশন দেয়া হয় ভাড়ার বিনিময়ে। তবে খুব দ্রুত বিষয়টা আমি দেখছি।

Side banner