Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:২৮ এএম অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক

সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে শিক্ষার্থীদের থেকে সরকারি ফি থেকে বেসরকারি ফি বেশি আদায়, পরিবহন খাতে অনিয়ম, উন্নয়ন তহবিলের ভাউচারে নয়ছয়, চিকিৎসাখাতে অসংগতিসহ নানা সেক্টরে অনিয়ম পেয়েছে দুদক। 
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে এ অভিযান  চলে। এ সময় দুদকের কর্মকর্তারা কলেজের প্রতিটি বিষয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবের ব্যাখা নেওয়ার পাশাপাশি সরাসরি ঘুরে দেখেন।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কলেজের একটি হাইয়েস গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, চালকের বেতন ও তেল খরচ বাবদ এক বছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া পরিবহন বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি বছরে ২৫০ টাকা করে আদায় করে বছরে প্রায় ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা তোলা হলেও কলেজে কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই।
দুদকের পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন সূত্রধর বলেন, পরিবহন খাতে শিক্ষার্থী বাবদ যে ২৫০ টাকা নিয়ে থাকে এটি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পাইনি। অধ্যক্ষ শুধুমাত্র ব্যক্তিগতভাবে নিজের কাছে হাইয়েস গাড়িটি ব্যবহার করেছেন। হাইয়েস গাড়ির মাইলেস এবং কত লিটার তেল ব্যবহার হয়েছে সেটি উল্লেখ নেই।
তিনি আরও বলেন, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে সরকারিভাবে শিক্ষার্থীদের থেকে যত টাকা আদায় করা হয়। বেসরকারিভাবে তার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করা হয়। শিক্ষার্থীদের থেকে ১৩০০ টাকা করে অত্যাবশ্যকীয় তহবিল আদায় করা হয়। তবে এই বড় অ্যামাউন্টের টাকা আসলে কীভাবে খরচ হয়? সেটির ব্যাখা হিসেবে নৈশপ্রহরী বা বিভিন্ন মাস্টার রোলের যে কর্মচারী রয়েছে- তাদের পেছনে খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। তবে এটির প্রশাসনিক কোনো নিয়ম অধ্যক্ষ দেখাতে পারেননি। পূর্বেও এভাবে টাকা তোলা হয়েছিল, এখনো সেভাবেই তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। 
সাধন সূত্রধর বলেন, উন্নয়ন তহবিলের ভাউচারটি আমাদের কাছে সঠিক মনে হয়নি। ওই ভাউচারে বিভিন্ন কাঠ কেনা, মিস্ত্রিদের মজুরি দেওয়ার মাস্টার রোল সঠিকভাবে প্রণয়ন করা হয়নি। এছাড়াও তাদের যে বিল দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো স্বাক্ষরও নেই। যে কাঠগুলো কিনে দরজা, জানালা বানানোর ব্যয় ধরা হয়েছে- সেসবের দৃশ্যমান কোনো প্রমাণ আমাদের দেখাতে পারেনি। 
দুদকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মাস্টার রোলের মাধ্যমে যেসব অনিয়মিত যেসব শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে প্রশাসনিক কোনো অনুমোদন আছে কিনা? সেটাও আমরা অধ্যক্ষকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো প্রশাসনিক অনুমোদন দেখাতে পারেননি। এছাড়াও চিকিৎসা বাবদ শিক্ষার্থীদের থেকে যে টাকা নেওয়া হয়, সেই চিকিৎসা খাতেও আমরা অসংগতি পেয়েছি।
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, একটি টাকাও নয়ছয় করা হয়নি। পরিবহন খাতের টাকাও ব্যাংকে রাখা আছে। যে কোনো খরচ হলে সেটিও ব্যাংক থেকে নিয়ে খরচ হয়। আমি প্রতিটি খরচ সিস্টেমের মধ্যে করেছি। একটি মহল শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেছে।

Side banner