‘ভাই আজকে তাজা খবর আছে’ বলেই পাঠকের হাতে পত্রিকা তুলে দেন যিনি, তিনিই হচ্ছেন গাইবান্ধার পত্রিকা বিক্রেতা আজাহার আলী। আধুনিক যুগে এসেও পায়ে হেঁটে পত্রিকা বিলি করেন পাঠকের কাছে। ৪২ বছর ধরে পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। সৎভাবে জীবন যাপনের অনন্য উদাহরণ আজাহার আলী।
আজাহারের জন্ম গাইবান্ধা পৌরসভার উত্তর ধানঘড়া গ্রামে। পিতা আফতাব উদ্দিনের ৪ সন্তানের মধ্যে ছোট সে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক সে। তিন সন্তানের বিয়ে হয়েছে। ছোট ছেলেটি অবিবাহিত রয়েছে। সকাল ৬টা থেকে পত্রিকা বিলির কাজ শুরু করেন। দৈনিক গড়ে ১০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে পত্রিকা বিক্রি করেন। এভাবেই কেটে গেল ৪২ বছর।
গাইবান্ধা পৌর শহরের পশ্চিমপাড়া, পলাশপাড়া, কলেজপাড়া, প্রফেসর কলোনী, বানিয়ারজান, ভিএইড রোড, শহরের বিভিন্ন অফিস আদালত এমনকি সদর উপজেলার ত্রিমোহিনী ও বাদিয়াখালিতেও পায়ে হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিক্রি করেন।
পত্রিকা বিক্রেতা আজাহার আলী এ প্রতিবেদককে জানান, এখন পর্যন্ত সুস্থ আছি। পাঠকরা তাকে ভালোবাসেন। তবে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পাঠক আর পত্রিকা ক্রয় করতে চান না। কারণ বর্তমান অনলাইনের যুগে সকলের হাতে স্মার্ট ফোন থাকায় ঘরে বসেই যখন তখন পত্রিকা দেখতে পান। শুধু তাই নয়, পত্রিকা বের হওয়ার আগেই পাঠকরা পত্রিকায় কি খবর আছে তা অনলাইনের মাধ্যমে জানতে পারেন। ফলে পত্রিকা বিক্রি অনেক কমে গেছে। এমনকি কর্মকর্তারাও কোনো কোনো সময় পত্রিকা নিতে রাজি হন না। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে তার জীবন চলে।
তিনি আরও বলেন, যেন তার পরিবারের কেউ আর এ পেশায় না আসে। পেশাটি ছাড়তেও পারছি না, ভালোমত বাঁচতেও পারছি না। তিনি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান, এ পেশায় আমরা যারা নিয়োজিত তাদের প্রতি সদয় দৃষ্টি দেয়ার জন্য।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, হকার আজাহার আলীকে বহুদিন ধরে চিনি। সে ন্যায় নিষ্ঠার সাথে পত্রিকা বিক্রি করেন। তার পেশাকে আমি সম্মান করি এবং একজন পাঠক হিসেবে তাকে ভালোবাসি।








































আপনার মতামত লিখুন :