Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২

‘পুলিশের গঠন পদ্ধতি না বদলালে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলতেই থাকবে’


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম ‘পুলিশের গঠন পদ্ধতি না বদলালে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলতেই থাকবে’

পুলিশের গঠন পদ্ধতি যদি না বদলায়, তাহলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলতেই থাকবে বলে মনে করেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সংলাপটির আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাখাওয়াত বলেন, ‘এই সরকার থেকে হতাশাই পাওয়ার কথা। আমরা কখনো বলিনি যে সবার বাড়িতে গোলাপ ফুল ফুটবে। আমি খুব বেশি পারদর্শী নই, যেসব মন্ত্রণালয়ে গেছি। আমি এক বছরে চারটা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। আই হোপ আই স্টে দেয়ার।’
পুলিশ চাকরি করতে চায়নি উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দেশে যা ঘটেছে তা অকল্পনীয়। এ ধরনের বিপ্লব আগে দেখা যায়নি। লিডারলেস ইয়াং, এমনকি স্কুলের বাচ্চারাও মারা গেছে। প্রায় এক মাস তারা রাস্তায় ছিল। তাদের কোনো সাহায্য ছিল না। কারা মেরেছে, বলার দরকার নাই। ৫ থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত  টানা ফোনকল পেয়েছি, কোথাও বাড়িতে আগুন, কোথাও থানায় আগুন। ৪০-৪৫টা থানা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মারা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হলো।’
তিনি আরও বলেন, আমি যখন দায়িত্ব নেই, ‘দেখি পুলিশ মোটেও আগ্রহী না। তারা বলছেন— আমরা চাকরি করব না। আমি আল্টিমেটাম দিলাম। এই পুলিশ এখনো স্ট্রাকচার্ড হয়নি। যদি পুলিশের গঠন-পদ্ধতি না বদলায়, তাহলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলতেই থাকবে। পুলিশ ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হলে ‘টু-স্টেজ রিক্রুটমেন্ট’ চালু করতে হবে। যেভাবে ছাত্রদল-ছাত্রলীগ ঢুকেছে, ভবিষ্যতেও তেমনই হবে। পুরোটা রাজনীতিকীকরণ হয়েছে। আমি প্রস্তাব দিয়েছি, জানি না বাস্তবায়ন হবে কিনা।’
শ্রম মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে অক্টোবরে দায়িত্ব পান শ্রম মন্ত্রণালয়ের। সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে শাখাওয়াত বলেন, ‘আমি তখন একেবারে প্রশান্ত মহাসাগরে। কোথায় যাবো, বুঝতে পারছিলাম না।’
দায়িত্ব নেওয়ার পরই বেক্সিমকো ইস্যু সামনে আসে। ৩৮ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। প্রতিদিন তারা অন্য গার্মেন্টসকে বিঘ্নিত করে। এটা আমার ঘাড়ে এসে পড়ে। আমি কিছুই করতে পারিনি, শুধু একটা কমিটি করতে পেরেছি। একটা কোম্পানি ১৬টি ব্যাংক ও ৭টি ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে ৪৮ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। কোথায় নিয়েছে, কেউ জানে না। আমরা খোঁজার চেষ্টা করেছি।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘জনতা ব্যাংক একাই দিয়েছে ২৪ হাজার কোটি টাকা। বারবার ফাইন্যান্স করেছে, অথচ কোনো কোলেটারাল নেই। আপনি শুনেছেন কখনো, একটা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পালিয়ে গেছেন? তিনজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের মধ্যে আছেন গরিবের গভর্নর— তিনিও পলাতক।’
‘আমরা রূপরেখা দিয়ে যাব, বাস্তবায়ন নাও হতে পারে’ উল্লেখ করে সাখাওয়াত বলেন, ‘হয়ত আমরা অনেক জায়গায় ফেল করেছি। তবে সবখানেই না। আমরা কিছু রূপরেখা রেখে যেতে পারি, কিন্তু বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই।’

Side banner