Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
নৌকা ও ঘোড়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

কে হবে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান?


দৈনিক পরিবার | ফজলে রাব্বি রিফাত জুন ৯, ২০২২, ১২:৫৬ পিএম কে হবে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান?

শিক্ষা, কৃষি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে অন্যতম সেরা ইউনিয়ন হলো দরিয়াদৌলত। প্রমত্তা মেঘনার কোলঘেষা উপজেলার উত্তরাঞ্চলে ৪,৯৫৯ একর বা ২০.০৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের গ্রামগুলো হলো মরিচাকান্দি, বাখরনগর, তাতুয়াকান্দি, কদমতলি, দরিয়াদৌলত, কালাইনগর ও শুটকিকান্দি। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন দরিয়াদৌলতে দেশ বরেণ্য অগণিত কৃতি সন্তানের জন্ম হয়েছে। এই ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেছেন সাবেক এমপি আফতাবউদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান, সাবেক এমপি শহিদুর রহমান, অভিনেত্রী ডলি জহুর, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মফিজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম সহ আরও অনেকে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পুরাতন জনপদের মধ্যে একটি। এর ইতিহাস অনেক সুবিস্তৃত। এখানে মরিচাকান্দি ডি টি একাডেমী ও দরিয়াদৌলত আবদুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় সহ সরকারি বেসরকারি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে একটি সমৃদ্ধশালী ইউনিয়ন হলো দরিয়াদৌলত। এই ইউনিয়নের কদমতলি গ্রামে আধ্যাত্মিক সাধক দয়াল বাবা কান্দু শাহের মাজার অবস্থিত। ব্রিটিশ আমলের প্রস্তাবিত থানা মরিচাকান্দি দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের অবস্থিত। রাজধানী ঢাকা, শিল্পনগরী নরসিংদী, গাজীপুর এমনকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য মরিচাকান্দি লঞ্চঘাট উল্লেখ করার মতো অবদান রেখে যাচ্ছে। কৃষি প্রধান এই ইউনিয়নের আছাদনগর গ্রামটি বাঞ্ছারামপুর পৌরসভায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে অন্যতম সেরা এই ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য বেশ প্রতিযোগিতা চলে। বিগত সময়ে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৭৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত দরিয়াদৌলত গ্রামের সুন্দর আলী সওদাগর, ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ থেকে ১৯৮৪ সালের ১৫ মে পর্যন্ত মরিচাকান্দির খাদেম রসুল, ১৯৮৪ সালের ১৫ মে থেকে ১৯৮৮ সালের ১৮ জুলাই পর্যন্ত আছাদনগরের আওলাদ হুসেন, ১৯৮৮ সালের ১৮ জুলাই থেকে ১৯৯২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মরিচাকন্দির খাদেম রসুল, ১৯৯২ সালের ৩০ জুন থেকে ১৯৯৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দরিয়াদৌলত গ্রামের আমিরুল ইসলাম, ১৯৯৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৩ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত মরিচাকান্দির জহিরুল ইসলাম, ২০০৩ সালের ৬ জুন থেকে ২০১১ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দরিয়াদৌলত গ্রামের নুরুল ইসলাম খাঁন, ২০১১ সালের ৭ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ১৪ মে পর্যন্ত বাখরনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম দায়িত্ব পালন করেছেন। তারপর থেকে অদ্যাবধি দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দরিয়াদৌলত গ্রামে মো. শরিফুল ইসলাম রিপন। গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মাহবুবুর রহমান উজ্জল। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন লোকমান হোসেন এবং স্বতন্ত্র এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক বাদল। ১৫ জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  
বর্তমানে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ইউনিয়ন। বিশেষ করে দরিয়াদৌলত বাজার, কদমতলি কান্দুশাহের মাজার প্রাঙ্গণ ও মরিচাকান্দি বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। সর্বত্রই আলোচনা চলছে কে হতে যাচ্ছে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান? এ বি এম মাহবুবুর রহমান উজ্জ্বল, নাকি এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক বাদল, নাকি লোকমান হোসেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি মেম্বার প্রার্থীরাও বসে নেই। সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা চোখে পড়ার মতো।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুবুর রহমান উজ্জল (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক বাদলের (ঘোড়া) মধ্যে। ইতোমধ্যে এই দুই প্রার্থী ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করে বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।   
নির্বাচন প্রসঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক বাদল বলেন, দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের জনগণ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা জামানত হারাবে। কারণ জনগণের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। তারা ব্যক্তির বন্দনা করে। প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান।
এদিকে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের নির্বাচন প্রসঙ্গে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বলেন, দরিয়াদৌলত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে জনগণই নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। তাছাড়া নৌকা হলো বঙ্গবন্ধুর প্রতীক। নৌকার পরাজয় অসম্ভব।

 

Side banner