ঝালকাঠিতে টানা বর্ষা জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৪ উপজেলার অন্তত অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এদিকে পানিতে তলিয়ে যায় জেলার ৩টি পন্টুনের সংযোগ সড়ক। নলছিটি উপজেলার ষাইটপাকিয়া-নলছিটি বন্দর ফেরি চলাচলের নলছিটি বন্দর অংশের পন্টুনের সংযোগ সড়ক, কচুয়া ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ও আমুয়া ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক। সুগন্ধা-বিষখালি নদীতে অবস্থিত এসব ফেরি দিয়ে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষজন জেলা শহরে যাতায়াত করেন। সামান্য জোয়ারেই পানিতে তলিয়ে যায় পন্টুনের সাথে সংযোগ সড়কের একাংশ যাতে ভোগান্তি পরেছেন এই ফেরি পারাপারে চলাচলকারী যাত্রীরা। যাত্রী সগির হোসেন জানান, আমি ঝালকাঠি সদরে একটি মোবাইল কোম্পানিতে জব করি। প্রতিদিন এই ফেরি পার হয়ে আমাকে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বিগত কয়েকমাস ধরে এখানে পন্টুনের সামনের সড়ক তিন চার ফুট পানিতে তলিয়ে থাকে। ফলে অনেক সময় গায়ের পোশাক ভিজে যায়। তারপরও বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আরেক যাত্রী নাজেম খান বলেন, অফিস সময়ে এই রুটে বিভিন্ন যানবাহনসহ অনেক যাত্রীই চলাচল করেন। কিন্তু পন্টুনের সংযোগ সড়কটি নিচু হওয়ায় পানিতে তলিয়ে থাকে যার কারনে অনেক যাত্রী বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে যাতায়াত করেন। কিন্তু অনেকে সময় স্বল্পতার কারণে পানিতে ভিজে হলেও এখান থেকেই যাতায়াত করেন। নদীর জোয়ারের পানির উচ্চতা অনুযায়ী সড়কটির উচ্চতা বৃদ্ধি করলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঝালকাঠি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের পানির কারণে এমনটা হচ্ছে। কিন্তু বেশ কয়েকমাস ধরেই এই সমস্যা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যদি সমস্যা দীর্ঘ দিনের হয়ে থাকে তাহলে সংযোগ সড়কের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ বিষয়ে খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে বিরামহীন ভারী বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোঁয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে কাঠালিয়ার শৌলজালিয়ার ডালির খালের বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে তিন থেকে চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে বাধঁ সংলগ্ন এলাকা। কচুয়া-শৌলজালিয়া সংযোগ সড়কটি সাবেক ইউপি সদস্য নাজির আহমেদ খন্দকারের বাড়ির সামনে থেকে ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছ। জেলার কৃষি ও মৎসের কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। পাকা আউশ ও আমনের বীজ তলা সহ কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসলের মাঠ পানিতে ডুবে আছে। ভেসে গেছে পুকুর, হ্যাচারি ও ঘেরসহ বিভিন্ন জলাশযের মাছ। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গ্রামের কাঁচা পাকা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গবাদি পশুর খাবার, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আপনার মতামত লিখুন :