Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি নয় রোদ চান নওগাঁর কৃষকরা


দৈনিক পরিবার | মো. খালেদ বিন ফিরোজ এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম বৃষ্টি নয় রোদ চান নওগাঁর কৃষকরা

চলমান তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টি চেয়ে দেশজুড়ে ইসতিসকার নামাজ পড়া হচ্ছে। তবে এ মুহুর্তে বৃষ্টি চাচ্ছেন না নওগাঁর ধান চাষিরা। কারণ চলমান তীব্র তাপদাহ আশা জাগাচ্ছে নওগাঁর ধান চাষিদের মনে। এমন তাপদাহে কষ্টের বদলে এক ধরনের স্বস্তি আছে তাদের মাঝে।
নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের দিঘলীবিল। এই বিলে প্রায় ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা মাড়াই। আবার কোথাও আধা পাকা ধান দোলে জমিতে। শুধু দিঘলী বিলই নয় বিভিন্ন নিচু এলাকায় শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা মাড়াই। আবার কোথাও কোথাও ধান আধপাকা অবস্থা। পুরো দমে ধান কাটা মাড়া শুরু হতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। তাই ফসল ঘরে তোলার পর বৃষ্টি এলেই ভালোই তাদের।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরেজমিনে দিঘলী বিলে গিয়ে দেখা যায় তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেই মাঠে ধান কাটছেন কৃষকরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন। তীব্র রোদ, ভ্যাপসা গরম কিছুই তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে না। ঘাম ঝরিয়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে না হয় আরেকটু বেশি ঘাম ঝরাবেন। তবুও বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি চান না কৃষকরা।
ধান চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় এখনও পর্যন্ত ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। এমন অবস্থায় বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও এ সময় একটু বৃষ্টি হলে নিচু এলাকার জমিতে পানি জমে যাবে। এছাড়াও ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ। তাই সব মিলিয়ে রোদ আর গরম যত বেশিই হোক, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারলেই খুশি তারা। এজন্য আরও প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এমন আবহাওয়ার চান তারা।
শৈলগাছী মধ্যেপাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মন্ডল বলেন, আজকে ১ বিঘা জমির ধান কাটছি। আর কিছু ধান জমিতে এখন আধাপাকা আছে। এ মুহূর্তে যদি ঝড় বৃষ্টি হয় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জমিতে পানি জমে গেলে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটতে পারব না। আবার মাঠে ধান রাখা যাবেও না। এমনিতেই এবছর শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় খরচ বেশি হয়েছে। সব মিলিয়ে ধান ভালোভাবে ঘরে তুলতে পারলেই আমরা খুশি।
আরেক কৃষক সোহাগ প্রামানিক বলেন, এবছর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ভালোই হয়েছে। তাই রোদ বা গরমে এখন আমাদের সমস্যাই না। তবে এখন বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই যে রকম আবহাওয়া আছে এরকম আরও বেশ কিছুদিন থাকলেও আমাদের জন্য ভালো।
কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের এই এলাকায় ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। সেগুলো ঘরে তোলা হচ্ছে। এখন ঝড় বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়বে। তাই আমরা চাই এমন আবহাওয়া আরও কিছুদিন যেন থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১২ লাখ ৮৫ হাজার ২১৫ টন ধান উৎপাদনের আশা। ধানের আবাদ ভালো হওয়ায় ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

Side banner