ঢাকার পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল প্রদর্শনী। বুধবার (১০ (সেপ্টেম্বর) এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান।
আজ থেকে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোখলেস উর রহমান বলেন, এই আয়োজন শুধু প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন। এটি আমাদের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পকে বিশ্বদরবারে আরও শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করবে। একদিকে যেমন দেশের বিভিন্ন খাতে অগ্রযাত্রা তুলে ধরা হবে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে উৎসাহ, আত্মবিশ্বাস ও উদ্ভাবনী চিন্তার জন্ম দেবে। উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অভিযাত্রায় এই এক্সপো একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালযয়ের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক-১ (যুগ্ম সচিব) বেবী রানি কর্মকার, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মুজিব-উল-ফেরদৌস, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ও বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রমুখ।
টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণ হিসেবে একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিনটি বড় মেলা। সেগুলো হলো ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ২৪তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক শো (সামার এডিশন), ৪৮তম ডাই-কেম বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন.ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে প্রদর্শনীগুলো আয়োজনের নানা বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এই তিনটি প্রদর্শনী বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পের বৃহত্তম ও প্রথম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। বিগত ২৩ বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছর ২৪তম বার এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব প্রদর্শনী ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের জন্য বৃহত্তম মিলনমেলা। প্রদর্শনীগুলো দেশি ও বিদেশি সরবরাহকারী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা হওয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দেশের বাইরে গিয়ে ক্রেতা অনুসন্ধান বা ভিসা জটিলতা পোহাতে হচ্ছে না। বরং অর্থ, শ্রম ও সময়ের সাশ্রয় করে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প সংশ্লিষ্ট ক্রেতা ও সরবরাহকারীরা এক ছাদের নিচে একত্র হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
এ প্রদর্শনীগুলো সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের অংশ। প্রতিবছর বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মরক্কো, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশন ইতিমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পের অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা পালন করছে। প্রদর্শনীগুলোতে ২ হাজার ২৪৫টির বেশি বুথসহ ৩৭টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৪৭৫টিরও বেশি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছেন।
ঢাকার পূর্বাচলে চলমান আন্তর্জাতিক এ প্রদর্শনীগুলোতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল মেশিনারি, ইয়ার্ন, ফেব্রিক, ট্রিমস, অ্যাকসেসরিজ, ডাইস্টাফ, টেক্সটাইল রাসায়নিকসহ সর্বাধুনিক টেক্সটাইল পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
এবারের টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণের উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো সাসটেইনেবিলিটি জোন, যেখানে অংশগ্রহণ করছে বিওয়াইটিইএস প্রজেক্ট অব সুইস কনটাক্ট, রিসাইকেল রো, স্কিউব টেকনোলজিস লিমিটেড ও প্রগতি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস (প্রাইভেট) লিমিটেড।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং আন্তর্জাতিক মানের শিল্পক্ষেত্র তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এটি। পাশাপাশি প্রদর্শনী চলাকালীন গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প বিষয়ক চারটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :