Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২

পটুয়াখালীর নদীর মোহনায় কমেছে ইলিশ 


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ১০:৩৮ এএম পটুয়াখালীর নদীর মোহনায় কমেছে ইলিশ 

দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদী থেকে ইলিশ নিয়ে তীরে ফিরছেন পটুয়াখালীর জেলেরা। মধ্য রাত থেকে ইলিশ ধরতে নেমে কয়েক ঘণ্টা পর তীরে ফিরে এসেছে ছোট নৌকা ও ট্রলার। তাছাড়া মাছ ধরার বড় বোটগুলো সমুদ্রের দিকে যেতে শুরু করছে। 
বড় বোটগুলো ফিরে আসতে শুরু করলে আরও ভালো আকারের ইলিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সকাল থেকে দেখা যায়, জেলার আলীপুর ও মহিপুর বন্দরেও কিছু সংখ্যক ট্রলার মাছ নিয়ে ভিড়েছে। ক্রেতা বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর ছিল আশপাশ।
শনিবার মধ্য রাত থেকেই পটুয়াখালীর পায়রা, তেঁতুলিয়া, গলাচিপা ও আগুনমুখা নদীতে ছোট নৌকা নিয়ে ইলিশ ধরতে শুরু করেন স্থানীয় জেলেরা। কিছুক্ষণ পর পর মাছ নিয়ে ফেরত আসছেন তারা। তবে জেলেদের দাবি, গতবারের তুলনায় নদীর মোহনায় কমেছে ইলিশের উপস্থিতি।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড়বিঘাই ইউনিয়নের জেলে মো. খলিল আকন জানান, গতবারও নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথম দিনেই প্রতিবার জাল ফেলে ৫-৭  কেজি করে মাছ পেয়েছেন, কিন্তু এ বছর প্রতিবারে পাচ্ছেন মাত্র দুই কেজি।  
পায়রা তীরের বিঘাই হাট গ্রামের মৎস্য আড়ৎদার ইমাম হোসেন জানান, জেলেরা ইলিশের তুলনায় বেশি পাচ্ছেন অন্যান্য ছোট মাছ। নদীতে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। 
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মাছ ব্যবসায়ী পিএম মুসা জানান, এখনো পরিপূর্ণভাবে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র নদীর জেলেরা কিছু মাছ নিয়ে ফিরছেন, তবে আরও ২-৩ দিন পরে  মাঝারি নৌকাগুলো আসতে শুরু করলে পরিমাণে বেশী ও বড় সাইজের মাছ পাওয়া যেতে পারে। 
নদীতে মাছের উপস্থিতি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবরোধে সাগরে যাওয়া সম্ভব না হলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের চোখের আড়ালে নদীতে জাল ফেলে মা ইলিশ ধরেছেন কিছু  অসাধু জেলেরা। ফলে এখানকার মাছ তেমন ডিম ছাড়তে পারেনি। এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ জালের ব্যবহারকেও ইলিশ কমার কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব ফিশারিজের প্রফেসর ড. এম লোকমান আলী বলেন, সমুদ্র থেকে আমাদের যে পরিমাণে  জিডিপি পাওয়ার কথা তা কিন্তু পাচ্ছি না। আমার জানামতে অনেকগুলো দেশ আছে যারা সামুদ্রিক মাছ ছাড়া খায়ই না। কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে উৎস ও স্কোপ থাকা সত্ত্বেও আমাদের মেরিনের (সমুদ্র) থেকে যে পরিমাণে আহরণ হওয়ার কথা বা মাছ আসার কথা বা ইকোনমির উন্নয়ন হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। সরকার চেষ্টা করছে কিন্তু আমার মনে হয় এদিকে আরও দৃষ্টি দেওয়া দরকার। 
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ২২ দিন ধরে আমরা সুচারুরূপে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সম্পন্ন করেছি। ১৪৬টি মোবাইল কোর্ট ও ৫৩৭টি অভিযান পরিচালনা করে ১৫০টি মামলার মাধ্যমে ১১১ জনকে জেলে পাঠিয়েছি। বিপুল পরিমাণ জাল জব্দসহ প্রায় ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নদী মোহনাকে মাছের উপযুক্ত নিরাপদ স্থান হিসেবে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা মৎস্য অধিদপ্তর সফল হয়েছি।

Side banner