Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২

গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ, আহত ২০


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:৪৩ পিএম গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ, আহত ২০

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের চরশিবায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের চরশিবা দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনে চৌরাস্তায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরশিবার ৯ নং ওয়ার্ডে দুই দলের সমর্থকদের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে দক্ষিণ কপালবেড়া চৌরাস্তা বাজারে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সভায় লোক উপস্থিতি নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় বিএনপির নমিনেশন হাসান মামুন পাবে নাকি গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পাবে এ বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এতে আহতদের মধ্যে রয়েছেন চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাড়ী ও সদস্য সবুজ রাঢ়ীসহ নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী এবং সলেমান রাঢ়ী। তারা সবাই বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অপর দিকে গণঅধিকার পরিষদের সমর্থকদের মধ্যে আহত হয়েছেন ইউনিয়ন যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল খলিফাসহ আজমির খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা।
এ ঘটনায় আহত যুবদল নেতা ইলিয়াস রাড়ী বলেন, হাসান মামুন ভাইয়ের প্রোগ্রামের জন্য রাতে আমরা কপালবেড়া বাজারে শুভেচ্ছা মিছিল করেছি। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার সময় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের ওয়ার্ড কমিটি গঠন উপলক্ষে কপালবেড়া বাজারে সভা ছিল। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে বলেছিল, কিন্তু আমি কাউকে সেখানে যেতে দেইনি। আমরা বলেছি, ৭ নভেম্বরের প্রোগ্রামে হাসান মামুন যে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। তবে তারা বলেছে, হাসান মামুন নমিনেশন পাবেন না, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। এরপরই তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় নুরুল হক নুরের ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, এ সংঘর্ষ সম্পূর্ণ পারিবারিক দ্বন্দ্ব। আহতরা গণঅধিকার ও বিএনপির সমর্থক, এটি সত্য। তবে আমার দ্বারা সংঘর্ষ ঘটানো হয়েছে এমন প্রচার মিথ্যা। আমার স্ত্রী অসুস্থ, আমি হাসপাতালে ছিলাম। আমাদের ছোট দল, আমরা কি সেই ক্ষমতা রাখি যে কাউকে হুমকি দিয়ে প্রোগ্রামে নেব? বরং অভিযোগ আছে, তারা বিভিন্ন লোককে হুমকি দিয়ে প্রোগ্রামে নেয়। আমরা আদর্শ নিয়ে দল পরিচালনা করি।
ইউনিয়ন যুব অধিকার পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক সোহেল খলিফা বলেন, বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হলে বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি, তখন উভয়ের মধ্যে মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
ঘটনার পর রাত ১২টায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন হাসপাতালে আহতদের খোঁজ নেন। তিনি উভয় দলের আহতদের চিকিৎসা এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করেন।
হাসান মামুন বলেন, আমরা ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি, তবে বিস্তারিত জানি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় নেতারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। শুক্রবার আমাদের দলের একটি র‌্যালি রয়েছে, তাই নেতাকর্মীরা সংগঠিত হচ্ছিলেন। প্রোগ্রাম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে হয়তো এই তৎপরতা চালানো হয়েছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ রক্ষায় সকলকে শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করছি।
পটুয়াখালীর গলাচিপা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, চরশিবা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে বলে জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Side banner