কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকড’ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বেলা সোয়া ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেট) এসে শেষ হয়।
এসময় ‘সারাবাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘আর না আর না, মেধাবীদের কান্না’’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
শিক্ষার্থীরা এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় পাশ বন্ধ করে দেয়। ফলে আরিচাগামী অংশের হেমায়েতপুর অবধি এবং ঢাকাগামী অংশের পল্লীবিদ্যুৎ পর্যন্ত এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিয়া সোহাগী বলেন," আমাদের এই আন্দোলন কোটা বিরোধী আন্দোলন নয়,এটি কোটা সংস্কার আন্দোলন। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও কেন এই বৈষম্য ছাত্র সমাজে বিরাজ করবে। আমরা কোটা বাতিলকে নয়, সংস্কার করে অনগ্রসরদের দেশের উন্নয়নে সুযোগ দেওয়া। ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রবর্তন করেছিল অন্তর্র্বতীকালীন সময়ের জন্য অর্থাৎ কিছু দিন পর এই কোটা বাতিল করার কথা ছিল কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটাকে কি স্বল্পকালীন সময়ের জন্য বলবেন? সুতরাং এই বৈষম্যমূলক মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্ত ঘোষনা করে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাই।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফ সোহেল বলেন,"আমরা গতকালকে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার আগে পর্যন্ত সরকার বা নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে আমরা কোনো ইতিবাচক সাড়া পাই নি। কালকে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার পরে আ্যটর্নি জেনারেল সাহেব, ওবায়দুল কাদের সাহেবসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনেকের কাছ থেকেই পজিটিভ ইন্টেন্ট পেয়েছি, তারা বলেছেন তারা পরিপত্র নিয়ে আন্তরিক, তারা আদালতে ছাত্রদের প্রতিনিধিও চেয়েছেন। এধরণের পজিটিভ ইন্টেন্ট শো করার জন্যই আমরা আজকে বেশি সময় অবরোধ করছি না। আমরা আগামীকালকে থেকে আরো কঠোর আন্দোলনে যেতে পারি, পরবর্তী আপডেট আমরা সন্ধ্যায় জানিয়ে দেব। আগামীকালকে আদালতের শুনানি আছে, সেখানে ১৮ সালের পরিপত্র বহাল করা হলে আমরা এটা তাদের একটি স্বদিচ্ছা হিসেবে মনে করবো এবং আমরা এই বিষয়ে আরো আন্তরিক হবো সরকার বা নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা করার জন্য।
উল্লেখ্য যে, ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ব্যাচ ও বিভাগ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো ক্লাস পরীক্ষা দিবেন না। এছাড়াও আগামীকাল আপিল বিভাগে সুনানি হবে, সুনানির পরে আন্দোলনের পরবর্তিত অবস্থা জানানো হবে বলে জানা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :