শাকিব খান বর্তমানে অবস্থান করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শবনম বুবলী ও ছেলে শেহজাদ খান বীরও রয়েছে তার সঙ্গে। ছেলেকে নিয়ে যে দারুণ সময় কাটছে শাকিব খানের, সেটি বোঝা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। সবকিছু নিয়ে বরাবরের মতোই আলোচনায় রয়েছেন শাকিব। তবে ১৫ আগস্ট এই অভিনেতা আলোচনায় আসেন ভিন্ন কারণে। শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি পোস্টকে ঘিরে তিনি যেমন আলোচিত হয়েছেন, তেমনি হয়েছেন সমালোচিতও।
মার্কিন সফর, ছেলে বীরের সঙ্গে কাটানো চমৎকার সময়, সেই সঙ্গে তার ওই পোস্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে।
শাকিব জানিয়েছেন, এর আগে ছেলে জয়কে আমেরিকা নিয়ে দারুণ কিছু স্মৃতি উপহার দিয়েছিলেন, এবার আরেক ছেলে বীরকে সে দেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখাচ্ছেন। যাতে বীরেরও চমৎকার কিছু স্মৃতি মনে থাকে।
এই অভিনেতা তার পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন। সামনে কী সিনেমা আসছে সে বিষয়ে শাকিব বলেন, ধুমধাড়াক্কা সিনেমা তো অনেক হয়েছে। এবার একটু অন্য ধরনের স্টোরি বেইজড সিনেমা আনতে চাই। সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবং কাজ আগাচ্ছে। নেক্সট আসছে সাকিব ফাহাদের পরিচালনায় ‘সোলজার’, যেটা এই ডিসেম্বরে রিলিজের প্ল্যান আছে এবং পরবর্তীতে আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ‘প্রিন্স’ রিলিজ হবে ঈদুল ফিতরে। আরও কয়েকটা সিনেমার স্টোরির কাজ চলছে।
এই অভিনেতা এ সময় সিনেমার পাইরেসি নিয়েও কথা বলেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়, তার সিনেমাগুলো যেমন সাফল্য পাচ্ছে, তেমনি পাইরেসি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে! এগুলো ইনটেনশনালি হচ্ছে বলে মনে তিনি মনে করেন কিনা।
উত্তরে শাকিব বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদের এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি প্রয়োজন। কঠোর হওয়া প্রয়োজন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। পাইরেসি যারাই করছে, বিষয়টি ইনটেনশনালি এবং পরিকল্পিতভাবে করছে মনে হয়!
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে শোক ও শ্রদ্ধা জানান শাকিব। এ ঘটনায় ইতিবাচক ও নেচিবাচক, উভয় ধরনের প্রতিক্রিয়ায় দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ বিষয়ে শাকিবের মতামত জানতে চাইলে একদম সরাসরি কথা বলেছেন এই অভিনেতা।
তিনি বলেন, দেখুন এখন আমাদের দেশে তো সব সেক্টরে সংস্কার চলছে। বিশ্বাস ছিল আমাদের চিন্তাভাবনাতেও এই সংস্কার প্রতিফলিত হবে। এমন প্রেক্ষাপটে দলমত নির্বিশেষে, জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদদের যেমন স্মরণ করা উচিত, তেমনি দেশের জন্য অতীতে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জাতির সেসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরও সম্মান জানানো উচিত। তাদের স্মরণে শ্রদ্ধা প্রদর্শন কোনো রাজনৈতিক দলের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ থাকা উচিত নয়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বেই থাকুক।
এরপর এ বিষয়ে শাকিব বলেন, দুঃখজনকভাবে অনেক সময় আমাদের জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম, সম্মান এবং ত্যাগ শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এটা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। যারা আমাদের দেশ ও মানুষের জন্য জীবনের সর্বস্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। দেখুন, আমি শাকিব খান, কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনও রাজনৈতিক পদ বা দায়িত্বও আমার নেই। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার অফার করা হয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র সিনেমার কথা ভেবে আমি সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছি। এমনকি কোনও ধরনের পলিটিক্যাল সুযোগ-সুবিধা নেইনি। বরং অনেক সময় আমাকেই কর্ম থেকে ব্যক্তিজীবনে পলিটিক্যাল লোক দ্বারা অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেটা তো সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে কারো অজানা থাকার কথা নয়।
উল্লেখ্য, গত ঈদুল আজহায় শাকিব খান ও সাবিলা নূর অভিনীত সিনেমা ‘তাণ্ডব’ দারুণ ব্যবসা করে। এই সিনেমার মাধ্যমে সাবিলার বড় পর্দায় অভিষেক হয়।
আপনার মতামত লিখুন :