Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
শপিং রাজ্য আগরতলা

ত্রিপুরার রাজধানীতে ভ্রমণ


দৈনিক পরিবার | ভ্রমণ ডেস্ক সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩, ০৯:২৩ পিএম ত্রিপুরার রাজধানীতে ভ্রমণ

আমরা ভারতে প্রায়ই ঘুরতে যাই। অনেক সময় আমাদের চিন্তা থাকে শপিং করবো কিভাবে, কোথায় কম খরচে পাবো? এই বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চান তাহলে আপনাদের জন্য এই ব্লগটি অনেক দরকার। অনেক সময় আমরা ঘুরি আবার কেনাকাটা করি। আবার এমনও হয় যে আমাদের শুধু নিয়ত থাকে কিনবো। কিন্তু সময় একটা বড় ব্যাপার। ভারত যেতে আসতে সময় লাগে দুইদিন আবার একদিন থাকা কতো ঝামেলা। খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি যে টাকা খরচ করে যাবো তা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কিনা যায়। আচ্ছা বলছি এরও সমাধান আছে। এটা শুধু যারা শপিং এর জন্য যেতে চান তাদের জন্য।
কোথায় যাবো:
ভারতবর্ষে শপিং করার জন্য সবচেয়ে সস্তা উপায় হল আগরতলা। কারণ আপনি যদি কলকাতাতে যান আপনার যাওয়া আসা থাকা খাওয়া মিলিয়ে অনেক পরে যাবে। আবার আপনাকে যেতে একদিন আসতে একদিন। আবার থাকতে হবে একদিন ৩ দিন তো চলে যাবে সে হিসেবে আপনি আগরতলা দিনে গিয়ে দিনেও আসতে পারবেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না আচ্ছা একটু অপেক্ষা করুন নিজেই বুঝবেন।
কিভাবে যাবো:
আপনি ঢাকা থেকে আগরতলাতে যাওয়ার জন্য ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। আগরতলাতে আপনি সরাসরি বাসেও যেতে পারেন। শ্যামলী পরিবহন সকাল ৮.৩০ মিনিটে ভাড়া ৭০০ টাকা। ঢাকা কমলাপুর থেকে আপনি বাসে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন। সকালে গেলে জ্যাম কম পড়বে সময় আনুমানিক ২.৫-৩ ঘণ্টা লাগবে। তারপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া নেমে অটোতে করে আখাউড়া যেতে হবে সিএনজিতে করে। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা নিবে জনপ্রতি শেয়ারে। তারপর আখাউড়া নেমে সিএনজিতে করে বাউতলা চেকপোস্ট যেতে হবে। ভাড়া ২০ টাকা নিবে দামাদামি করে নিবেন না হলে ভাড়া বাড়িয়ে দিবে। আগরতলা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হল ট্রেন। ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়ে সকালে ৬.৩০ এবং ৭.৪৫ মিনিটে। যদি সকালে যেতে চান তাহলে এই দুটি ট্রেনে যাওয়া ভাল। আখাউড়া যেতে ঢাকা থেকে ২-২.৩০ ঘণ্টা লাগবে। তারপর আখাউড়া নেমে সিএনজিতে বাউতলা চেকপোস্ট চলে যাবেন ভাড়া আগের মতই ২০ টাকা শেয়ারে। আবার আগরতলাতে যদি দিনে গিয়ে দিনে আসতে চান কিনাকাটা করে তাহলে ঢাকা থেকে রাতের ট্রেনে আখাউড়া যেতে পারেন। রাতে ১১.৩০ মিনিটে ট্রেন তুর্ণা নিশিথা ছাড়ে আনুমানিক রাত ৩ টা বাজে পৌঁছায়। আপনি স্টেশনে রাত কাটাতে পারেন। ট্রেনে ভাড়া ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা ভাড়া পড়তে পারে ট্রেন ভেদে (শোভন শ্রেণী)। তারপর সকাল হলে চেকপোস্টে চলে যাবেন সকাল ৭.৩০ থেকে বর্ডার খুলে। সকাল সকাল ঢুকলে আপনি খুব অল্প সময় এ বর্ডার ক্রস করতে পারবেন। কারণ সকাল ১০ টার পর বর্ডার এ ভীড় হয়।
বর্ডার তো ক্রস করলাম এখন কি করবো ভাই:
অভিনন্দন বর্ডার ক্রস করার জন্য।এখন বর্ডার থেকে আপনি ২০ রুপিতে অটো করে বটতলা চলে যাবেন। অবশ্য বর্ডার থেকে ২ মিনিট হাঁটলে গোল চক্করে গেলে ১০ রুপী ভাড়া নিবে বটতলার জন্য।
কোথায় থাকবো:
বটতলাতে অনেক হোটেল আছে। আপনি যেকোনো একটাতে থাকতে পারেন। যেমন হোটেল রাঙ্গামাটিতে থাকতে পারে ২ জনের রুম ৯০০ রুপী আর একজনের জন্য ৭০০ রুপি। হোটেলটা ভাল। ওই হোটেলের মালিক বাংলাদেশি। আবার আরও কিছু হোটেল আছে আর সস্তা যেমন বটতলাতে কিছু হোটেল আছে ২ জনের ৪০০ রুপী অবশ্য শেয়ার বাথরুম। আবার বটতলা থেকে একটু আগিয়ে অটোতে শেয়ারে ১০ রুপীতে কামান চৌমুহনি চলে যাবেন। ওখানে একটা মসজিদ গলি আছে ওখানে রুম একটু কমে পাওয়া যায়। মসজিদ এর সাথে ১ জনের রুম ৪৫০ রুপে ২ জনের ৫৫০ রুপি রুমে বাথরুম আছে। আরেকটা কথা বলে নেই আগরতলা অনেক ছোট শহর। এই শহরে অনেক চৌরাস্তা আছে এদেরকে চৌমুহনি বলে।
খাবার:
আগরতলার বটতলাতে অনেক খাবারের হোটেল আছে। আপনি খেয়ে নিতে পারেন পছন্দ মত। তবে হোটেল রাঙ্গামাটির সাথে একটা খাবার হোটেল আছে ওটা একটু সস্তা। আপনি ভাত সবজি ভাজি ডাল খাবেন ৬০ রুপিতে। আগরতলাতে রাতে বিভিন্ন স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়। মম খেতে পারেন প্রতি প্লেট ৫০ রুপি নেয় ৮ পিস দেয়।
কোথায় শপিং করবো:
আগরতলাতে মোটামুটি আপনি সব পাবেন যা কলকাতাতে পেতেন। দাম একটু ভিন্ন হতে পারে। বটতলা পার হয়ে সামনে কামান চৌমুহনির দিকটাতে যাবেন। সেখান থেকে সবগুলো শপিং প্লেসগুলো কাছে।
আগরতলার জনপ্রিয় শপিং প্লেস:
বিগ বাজার
কামান চৌমুহনির আগে বিগ বাজার পাবেন ওখানে কেনাকাটা করতে পারেন। বিগ বাজারের পাশে বিভিন্ন ব্রান্ড এর শোরুম আছে ফাস্টট্রাক এর ঘড়ি পাবেন, পুমা, এডিডাস, লিভাইস বিভিন্ন ব্রান্ড এর দোকান পাবেন। বিগ বাজারে সব পাবেন কাপড়, কসমেটিকস, জুতা, চকলেট পাবেন। আর কম কিনতে চাইলে বিগ বাজার থেকে নিতে পারেন।
কামান চৌমুহনি
কামান চৌমুহনির ওইদিকে অনেক দোকান আছে। ঘুরে দেখতে পারেন।
আগরতলা সিটি সেন্টার
আগরতলা সিটি সেন্টার আছে। বিকেলের দিকে যাবেন।
গোল বাজার:
গোল বাজার কামান চৌমুহনি থেকে অনেক কাছে। চাইলে ১০ মিনিটে হেঁটে চলে যেতে পারেন। যারা চকলেট, তেল সাবান শ্যাম্পু আর কিছু কিনতে চান তারা গোল বাজার চলে যাবেন। ওটা হচ্ছে পাইকারি মার্কেট। আপনি বেশি কিনলে সস্তায় কিনতে পারবেন আবার গোল বাজারে অনেক কিছু পাওয়া যায়। ওখানে আরেকটা মার্কেট আছে কলকাতা বাজার। ওটা বিগ বাজারের মত। ওখানেও অনেক কিছু আছে সস্তায় পাবেন। কাপড়ে অনেক ছাড় থাকে। কেনাকাটা শেষে আপনি চাইলে বাংলাদেশে চলে আসতে পারেন অথবা রাতে থেকে সকালে আসতে পারেন।
আগরতলাতে কি দেখব
আগরতলায় অনেক কিছু দেখার আছে। তবে আপনারা চাইলে নেহেরু পার্ক ঘুরতে পারেন এটা রাধানগর এর কাছে। আগরতলা শহরটা মোটামুটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তায় হাটাহাটি করে মজা পাবেন। ওখানের মানুষগুলো ভাল। বাংলাদেশের মানুষকে সম্মান করে। আপনি চাইলে আগরতলার গ্রামগুলো ঘুরতে পারেন। যেমন বিশালঘর অবশ্য বাংলাদেশের গ্রামের মতই।
এবার ফেরার পালা:
আপনি যদি দিনে দিনে ফিরে আসতে চান অবশ্যই ৫টার মধ্যে বর্ডারে চলে আসবেন। কারণ দেরি করলে বর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে। বর্ডার ৬টার মধ্যে বন্ধ হয়। দেরি করলে ইমিগ্রেশন অফিসার ঝামেলা করে ছাড়তে চায় না। অপমান করে বলবে তোমাদের কেনাকাটা শেষ হয় না। তাই আগে আগে চলে যাওয়া ভাল। আর যদি কেউ রাতে থেকে সকালে আসতে চান তাও করতে পারেন। সকাল ৭.৩০ থেকে বর্ডার খুলে। আসার নিয়ম একই আপনি বটতলা থেকে বর্ডারে চলে আসবেন। আরেকটা বিষয় আসার দিন ইন্ডিয়ান কাস্টমস ডলার ভাঙ্গানোর রিসিট দেখতে চায় এটা রাখা ভাল। তবে না থাকলেও প্রবলেম নেই। বাংলাদেশি কাস্টমস আসার সময় টাকা চায়। অনেক জিনিস দেখলে চা নাস্তার টাকা চায়। বেশি কথা বললে ১০০ টাকা ধরিয়ে দিবেন। তারপর চলে আসবেন আপন দেশে।

 

Side banner