Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৩২ জন নিহত


দৈনিক পরিবার | আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৮:১৯ এএম ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৩২ জন নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ত্রাণের সন্ধানে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেড়ে চলা খাদ্য সংকটের মধ্যে একই দিনে অপুষ্টিতে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় উত্তর গাজার বড় অংশ এখন “নিষ্প্রাণ ধ্বংসস্তূপে” পরিণত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এদিকে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজা সিটির একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন। শহরের তুফাহ এলাকায় অন্য এক হামলায় আরও দু’জন নিহত হন।
এই হত্যাযজ্ঞ এমন এক সময়ে ঘটছে যখন ইসরায়েল গাজা সিটিতে হামলা আরও তীব্র করেছে। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি শহরটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে লাখো ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় গাদাগাদি করে বসবাস করতে বাধ্য করা হতে পারে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে, এমনকি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতর থেকেও এর বিরোধিতা এসেছে।
বৃহস্পতিবার আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় উত্তর গাজার বড় অংশ এখন “নিষ্প্রাণ ধ্বংসস্তূপে” পরিণত হয়েছে। গাজা সিটির বাসিন্দারা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত, কারণ শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে ইসরায়েল তাদের আরও দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ওয়ালা সুবহ জানান, যুদ্ধ শুরুর পর তিনি উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া থেকে গাজা সিটিতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং এখন আর সরে যাওয়ার উপায় নেই। তিনি বলেন, “আমরা কোথাও যেতে পারি না, আয়ও নেই—আমি একজন বিধবা। যদি আমাদের বের করে দিতে চায়, তবে অন্তত আমাদের থাকার জায়গা দিক, তাঁবু দিক, বিশেষ করে বিধবা, শিশু আর অসুস্থদের জন্য। এখানে কয়েকজন নয়, লাখো মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হবে, যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।”
উম সাজেদ হামদান নামে আরেক নারী বলেন, তিনি এই নির্দেশ মানবেন না। তিনি বলেন, “আমি পাঁচ সন্তানের মা, স্বামী বন্দি। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সন্তানদের নিয়ে পালানো সম্ভব নয়। আল-মাওয়াসিতে যাওয়ার চেয়ে আমি গাজা সিটিতেই মৃত্যুর মুখোমুখি হতে রাজি।”
আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেছেন, গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, “এটি ভয়াবহ এক উসকানি। নেতানিয়াহু আসলেই গাজা পুনর্দখলের পরিকল্পনা করছেন... সেনা পাঠিয়ে আবার পুরোপুরি দখল নিতে চান।”
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমাসরি আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা সিটিতে অভিযান বাড়ায়, তবে এর মানবিক পরিণতি হবে ভয়াবহ। তিনি বলেন, “এরা এমন মানুষ, যাদের কেউ ১০ বার, কেউ ২০ বার পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, গত ২২ মাস ধরে প্রতিনিয়ত বোমা এড়িয়ে বেঁচে আছেন, আর এখন তারা অনাহারে ভুগছেন।”
আলমাসরি এই পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর কৌশলের অংশ হিসেবেও বর্ণনা করেন। তিনি মন্তব্য করেন, “ইসরায়েল গাজা উপত্যকা খালি করতে চায়, আর অন্তত জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত পুরো ভূখণ্ড নিজের দখলে নিতে চায়।”

Side banner