সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে র্যালী, যুব প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, মশক নিধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ১২ আগস্ট) দুপুরে ‘প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বিশ্বনাথ উপজেলা অডিটোরিয়াম হলে উপজেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বিশ্বনাথের উদ্যোগে উক্ত কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও যুব প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণে উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামন থেকে মাত্র ২০ ফুট জায়গার ভেতর সীমাবদ্ধ র্যালী, অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গনে ১ টি বৃক্ষরোপণ এবং পৌরসভার উদ্যোগে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখের সামান্য স্থানে মশক নিধনের ঔষধ স্পে’র কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া যুব উন্নয়ন দপ্তরের অধীনে বিভিন্ন প্রকারের প্রশিক্ষনে অংগ্রহনকারী সফল উদ্যোক্তাদের মাঝে আলোচনা পর্ব শেষে সনদ বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
বিশ্বনাথ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোপাল চন্দ দাসের সভাপতিত্বে ও সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ দাসের পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন যুব উদ্যোক্তা রায়হান আহমদ ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন যুব উন্নয়ন বিশ্বনাথ অফিসের সহকারী সুজিত চন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও পৌর প্রশাসক আলা উদ্দিন কাদের। এসময় তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবসের তাৎপরয বিষয়ক এবং প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন তরাম্বিত করার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশ্বনাথ পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী আব্দুল হাই, বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী দয়াল উদ্দিন তালুকদার, ৫ নং দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজ আরব খাঁন ও ৩ নং অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান লিটন।
ইউপি চেয়ারম্যানদের বক্তব্যে আতিকুর রহমান লিটন বলেন, আজকে অভিনব কায়দায় যে একটি বৃক্ষরোপন ও কিছু স্থানে মশক নিধনের নামে যে নাটক আমরা দেখলাম এধরনের নাটক ভবিষ্যাতে আর দেখতে চাই না। আমরা চাই উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে যথাযত ভাবে উপকারী কারযক্রম যেন পরিচাল না করা হয়। আপনাদের জনবল সংকটসহ নানা অজুহাত শুনতে চাই না। এখানে প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তির কথা বলা হয়েছে কিন্তু এর কোনো কারযক্রমই দেখা যায় না।বাস্তবের সাথে কথার কোনো মিল নাই। শুধু পৌর সভা নয় ইউনিয়নগুলোর দিকে নজর দিন । গ্রাম পরযায়ে হাজার হাজার যুবক বেকার পড়ে আছে তাদের কাজে লাগানোর প্রশিক্ষণ নাই, প্রশিক্ষণের প্রচার নাই, কখন প্রশিক্ষণ আসে, কোথায় হয় তা আমরা জনপ্রতিনিধি হয়ে ও জানতে পারি না। এখন থেকে এসব করা যাবে না। যুব অফিসে যারা কাজ করেন তারা যেন স্থানীয় প্রতিনিধিদের অবগত করেন, তাহলে আমরা গ্রাম পরযায়ে বেকার পড়ে থাকা যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ করে দিতে ভুমিকা রাখতে পারব।
হাফিজ আরব খাঁন বলেন, এতবড় একটি পৌরসভার মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনে (কানায়-কোনায়) ঔষধ স্পে করা একটি তামাশা। এছাড়া যুবদের কোথায় কখন কিসের প্রশিক্ষণ হয় তা আমাদের অবগত করা উচিৎ। আমরা বিশ্বনাথের উন্নয়নে পৌর ও ইউনিয়ন মিলিয়ে সমান ভাবে কাজ করতে চাই। সরকারী প্রশিক্ষণ এলে গণহারে প্রচার করে ব্যাপক ভাবে যুবকদের প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা যেন উপজেলা যুবউন্নয়ন অফিসের কর্তারা নেন সেই বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ রাখেন তিনি।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাস্টার এমাদ উদ্দিন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোবিন্দ মালাকার, বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক কবি এস. পি সেবু, আলো বহুমুখি সমবায় সমিতির লিঃ চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রিপন, রামপুর যুব সংঘের সভাপতি ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোক্তা আশরাফুল ইসলাম এবং যুব প্রশিক্ষনার্থী উদ্যোক্তা রিপা আক্তার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহিন মাহবুব, বিশ্বনাথ থানার এস আই পান্না লাল দেব, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মতিউর রহমান, উপজেলা বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কাওছার আহমদ তুলাই, পৌর জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :