হেমন্তের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আর কদিন পর শুরু হবে বিয়ের মৌসুম। তারপর বড়দিন আর বছর বিদায়ী অনুষ্ঠানগুলো তো পড়েই রয়েছে। ফলে বছরের বাকি সময়টুকু হইহুল্লোড়ে পার হবে। এসব উপলক্ষকে কেন্দ্র করে ঘরবাড়ি নতুন করে সাজানো থেকে শুরু করে সুস্বাদু খাবার তৈরি—সবখানেই থাকে আড়ম্বর। কেনা হয় নতুন পোশাক ও গয়না। কিন্তু এত সবের মাঝে ত্বকের প্রস্তুতি কী, বলুন তো? বিশেষ দিনের আগে একদিন ফেয়ার পলিশ আর ব্রাইটেনিং ফেশিয়াল করলেই ত্বক উজ্জ্বল হয় না। এটি ভেতর থেকে ভালো থাকলে উজ্জ্বলতা এমনিই আসবে।
স্কিন ডায়েট বিষয়ে জেনে নিন
আজকাল ‘স্কিন ডায়েট’ বলে একটা ব্যাপার বেশ চর্চায় রয়েছে। কী এই স্কিন ডায়েট? একটু খোলাসা করেই বলা যাক। স্কিন ডায়েট হলো এমন এক খাদ্যাভ্যাস, যেখানে স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া ও পানীয় পান করা হয়। এড়িয়ে চলা হয় কিছু খাবার। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, ত্বক ভেতর থেকে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখা, ব্রণের মতো সমস্যা কমানো, দাগছোপ ও অকালে বলিরেখা পড়তে না দেওয়া এবং ত্বকের অকালবার্ধক্য প্রতিরোধ করা। এই ডায়েটে তাজা ফল, সবজি ও স্বাস্থ্যকর চর্বি বেশি থাকে। আর কম থাকে অতিরিক্ত চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার।
তবে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে বাহ্যিক যত্নের দিকে আমরা যতটা নজর দিই, ঠিক ততটাই অবহেলা করি সুস্থ ত্বকের উপযোগী খাদ্য-পানীয় গ্রহণে। ফলে দিন দিন ত্বক ক্লান্ত হয়ে পড়ে সুস্থতা হারায়। তাই বলে ঘটা করে একদিন স্কিন ডায়েটে ভালো খাবার রেখে পরের তিন মাস বেমালুম ভুলে যাবেন, তা হলে ফল হবে শূন্য। বিশেষ দিনে বিশেষ জেল্লা ছড়াতে চাইলে আটঘাট বেঁধে নামা চাই। প্রতিদিনই স্কিন ডায়েট মেনুতে কয়েকটি খাবার রাখতে হবে।
জাফরান ভেজানো পানি
দ্রুততম সময়ে ত্বকে জেল্লা ফিরে পেতে চাইলে জাফরান ভেজানো পানি পানে উপকার পাবেন। জাফরান ভেজানো পানি তৈরি করতে ২ বা ৩টি জাফরান এক কাপ কুসুম গরম পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করুন। চাইলে রাতে ভিজিয়ে সকালবেলা খালি পেটে পান করতে পারেন। জাফরান ভিটামিন ও প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। এটি আপনার ত্বক প্রশান্ত করতে এবং উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করবে। এই পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও রক্তসঞ্চালন বাড়ে। শক্তি বৃদ্ধিতেও এর জুড়ি নেই।
আমলকীর শট
আমলকী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খনিজে ভরপুর। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবে ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল দেখায়। প্রতিদিন দুটি আমলকী রস করে এক কাপ কুসুম গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা নিজেই টের পাবেন।
বাদাম
স্বাস্থ্যকর গুণ থাকায় বাদামকে সুপার ফুড বলা হয়। এতে থাকা আঁশ বিপাক প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। প্রতিদিন যেকোনো বাদাম এক মুঠো পরিমাণ খেলে উপকার পাওয়া যায়। বাদামের মধ্য়কার ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
সাইট্রাস ফল
সাইট্রাস হলো টকজাতীয় ফল। এ ধরনের ফলের গুণের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। এগুলোতে থাকে ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, টারপেন ও সাইট্রিক অ্যাসিড। এসব উপাদান এ-জাতীয় ফলগুলোকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্বাদ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা দেয়। লেবু, কমলা ও অন্যান্য টক ফলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন দূষণ থেকে সৃষ্ট ত্বকের ক্ষতি সারাতে সাহায্য করে। ত্বক ভেতর থেকে পরিচ্ছন্ন রাখতেও এর জুড়ি নেই। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক লেবু রস করে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। শরীরও চাঙা হয়ে উঠবে, বাড়তি মেদও কমবে; পাশাপাশি ত্বকও চকচকে হয়ে উঠবে। ফলে বিশেষ দিনে মেকআপ ছাড়াই ঝলমল করবে আপনার ত্বক।
সূত্র: এনডিটিভি ফুডস
আপনার মতামত লিখুন :