শেরপুরে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা গাজীরখামার-নালিতাবাড়ী সড়কটি এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট-বড় গর্ত ও উঁচু-নিচু খাদের কারণে পরিণত হয়েছে বেহালদশায়। ফলে দীর্ঘ চার বছর ধরে হাজারো মানুষ, যানবাহন ও শিক্ষার্থীসহ রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নালিতাবাড়ী থেকে গাজীরখামার হয়ে শেরপুর শহরে যাতায়াতের জন্য প্রতিনিয়ত লোকজন রাস্তাটি ব্যবহার করে। কিন্তু এতে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় গর্ত। গাজীরখামার বাজারের লোকজন ভাঙা রাস্তায় ইট, বালু ও সুরকি ফেলে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির ১৭ কিলোমিটার অংশ প্রশস্ত ও সংস্কার করা হয়। তবে কাজটি শেষ হতে সময় লাগে চার বছর। ২০২০ সালে কাজ শেষ হলেও এক বছর না যেতেই ফের ভেঙে পড়ে সড়কটি। এমনভাবে ভেঙেছে যেন পাকা সড়কের কোনো চিহ্ন নেই।
এ সড়কে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করা নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ আশপাশের ইউনিয়নের এলাকাবাসী ও পথচারীরা জানান, কয়েক বছর ধরে রাস্তাটির কাজ না হওয়ায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার কোথাও কোথাও উঁচু-নিচু হওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এতে করে ঘটছে দুর্ঘটনা।
রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করা অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা জানান, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চলাচলে অল্প সময়ের মধ্যে যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। এরমধ্যে আবার বৃষ্টি। ফলে রাস্তায় গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জানায়, সড়কটি সংস্কারে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন পেলে পুরো সড়কের কাজ শুরু হবে।
সৃজন পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির সেতু বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাটি ভেঙে পড়ে আছে। কোথাও কোথাও ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে যানবাহনগুলো উল্টে যায়। ফলে ভয় নিয়ে চলাচল করতে হয়।
চাকরিজীবী মোক্তার আলী বলেন, প্রতিদিন আমি গাজীখামার হয়ে নালিতাবাড়ী যাতায়াত করি। রাস্তার এমন অবস্থা সব সময় ভয় কাজ করে, কখন গাড়ি উল্টে যায়।
নাকশি গ্রামের গোলাম কিবরিয়া বলেন, দ্রুত সংস্কার না করলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাটির সংস্কার করা হোক।
শেরপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সড়কটির সংস্কারে একটি বড় প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এতে শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর থেকে গাজীরখামার, নালিতাবাড়ী হয়ে হালুয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা হবে। প্রকল্প অনুমোদন হলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে কাজ।
আপনার মতামত লিখুন :