টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পুষ্পস্তবক শহীদ বেদী থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ময়লার ট্রাকে অপসারণ করেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দায়িত্বে থাকা টাঙ্গাইল পৌর প্রশাসন।
এ ঘটনায় জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর বিষয়টি একটু ভুল হয়েছে স্বীকার করে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না। এ বিষয়ে আমরা সচেতন থাকবো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রথমে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রথম প্রহরে ও সকালে বিভিন্ন সরকারি-বেসকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এবং বিভিন্ন সংগঠন টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে শহীদ বেদীতে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কার্যক্রম।
কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইল পৌরসভার ময়লার গাড়ি এসে শহীদ মিনারের পাশে দাঁড়ায়। এ সময় পৌরসভার কয়েকজন কর্মচারীরা গণমানুষের দেওয়া শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলের তোড়া শহীদ বেদী থেকে পৌরসভার ময়লার গাড়িতে তুলতে থাকে। ফুলের তোড়াগুলো তারা পৌরসভার ময়লার গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এতে এক ঘণ্টার মধ্যেই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো ফুলগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ নাগরিক-সমাজের লোকজন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। মহান ভাষা আন্দোলনে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। কিন্তু টাঙ্গাইল পৌরসভা এমন অবিবেচক হলো কিভাবে, যে তারা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শহীদ বেদীর ফুল তুলে ময়লার গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল। সকাল ১১ টা পর্যন্ত তো নানা শ্রেণির মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তাহলে ১২ টার মধ্যেই নিতে হবে? এতে করে শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে মেয়র কিভাবে এমন অন্যায় কাজ করতে পারেন।
বিষয়টি একটু ভুল হয়েছে স্বীকার করে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না। এ বিষয়ে আমরা সচেতন থাকবো। বরাবরের মতো এ বছরও দুপুরের আগেই ফুলগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে বিকালের পর অপসারণ করা হলে ভালো হতো বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :