 
                                    
            গত রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে শেরপুরের ব্রহ্মপুত্র নদের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল থেকে আব্দুল হালিম জীবন (৪৮) এর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় জেলা জোরে তোলপাড় শুরু হলে নারি সহ ৬ জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন সদর উপজেলার সাতপাখিয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ (৬৫)। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ উদ্দিনের ছেলে।   অন্যরা হলে মোবারক এ মোস্তাক (৩২), মনোয়ারা বেগম (৩০), মোঃ রকিব হোসেন জিহান (২০), কালু মিয়া (২৫), রুপা বেগম (২৮)।
জানা গেছে, আব্দুল হালিম জীবন একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এবং আমেরিকান পাসপোর্টধারী দ্বৈত নাগরিক। দীর্ঘ ২৫ বছর  ধরে তিনি আমেরিকায় বসবাস করে আসছেন।
এদিকে গত রবিবার আব্দুল হালিম জীবন এর মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনসহ  ঘটনার সাথে জড়িত ছয় জনকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে সোমবার দুপুরে হত্যা রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম। ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, আব্দুল হালিম জীবন নিঃসন্তান হওয়ায় দুই বছর পূর্বে বাংলাদেশে এসে ২য় বিয়ে করেন। এই বিয়েসহ পারিবারিক বিষয়ে তার পিতামাতার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জীবন ও তার স্ত্রী পিতার বিরুদ্ধে ২ টি এবং পিতা ছেলে জীবন এর বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করেন। একটি মামলায় জীবন এর পিতা প্রায় দেড় মাস কারাভোগ করে এক সপ্তাহ পূর্বে জামিনে আসেন। এজন্য পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার আমেরিকান প্রবাসী আরেক ভাই এর বন্ধু শাহিনকে দিয়ে জীবনকে শায়েস্তা করতে বলেন।
শাহিন তার ব্যবসায়িক পার্টনার আব্দুর রউফ (সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান) এর সাহায্য নেন। আব্দুর রউফ তার সহযোগী কালু, ময়নাল, জিহাদ, মোবারকদের জীবনকে শায়েস্তা করতে নির্দেশ দেন।
কালু তার পূর্ব পরিচিত মনোয়ারা ও রূপাকে বিষয়টি জানালে রুপা বেগম জীবন এর সাথে প্রেমের অভিনয় করে। পরে রুপা বেগম গত ৩০ মার্চ শনিবার বিকেল সারে তিনটায় জীবনকে ডেকে এনে কৌশলে আসামীদের হাতে তুলে দেয়। আসামী আব্দুর রউফ, কালু, ময়নাল, জিহাদ, মোবারকগন জীবনকে একটি ঘয়ে আটকে রেখে রাত নয়টার দিকে জীবন এর মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর নিকট ৯৩ হাজার টাকা মুক্তিপন চেয়ে অপহরনের নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। পরে আসামীরা জীবনকে ঘটনাস্থলে ফাকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। এসময় ধস্তাধস্তিতে আসামী কালু ও জিয়াদ আহত হয়। তারা বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।








































আপনার মতামত লিখুন :