শুটিংয়ের প্রায় তিন বছর পর শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ফেরেশতে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এক ফেসবুক পোস্টে মুক্তির দিনক্ষণ জানান সিনেমাটির অন্যতম অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান।
চলচ্চিত্রটিতে সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনের গল্প তুলে এনেছেন ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম। ইরানের ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবসহ বেশ কয়েকটি উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৪-এর উদ্বোধনী চলচ্চিত্র ছিল ফেরেশতে।
নিজের চরিত্র নিয়ে জয়া বলেন, আমাদের দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভেতরে যে সংগ্রামী ও সাহসী চরিত্র রয়েছে, তাদেরই একজনের ভূমিকায় আমি অভিনয় করেছি। রিয়েল লোকেশনে শুটিং করে সিনেমাটিকে বাস্তবসম্মত করার চেষ্টা করেছেন নির্মাতা।
জয়া বলেন, পুরো টিম সহযোগিতা করায় কঠিন শুটিং সুষ্ঠুভাবে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। এই সিনেমায় কাজ করাটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরিচালকসহ পুরো টিম ওদের দেশের ভাষায় কথা বলে। তবে চলচ্চিত্রের তো ভাষা নেই। সে কারণে আমরা সবাই অদ্ভুতভাবে সংযোগ করতে পেরেছি।
সিনেমার জন্য জয়া আহসানকে কেন বেছে নিয়েছেন? ২০২২ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্নের জবাবে পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম বলেছিলেন, জয়া সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। বাংলাদেশে এই ছবি করার সিদ্ধান্ত যখন নিলাম, তখন জয়ার কথাই ভেবেছি। এরপর জয়ার ছবিগুলো দেখেছি, জয়াও আমার ছবিগুলো দেখেছেন। আমাদের কাছে জয়াকেই তাই সেরা মনে হয়েছে। ছবিটির সহ প্রযোজকও জয়া আহসান।
২০২২ সালেই শেষ হয় সিনেমাটির দৃশ্যধারণ। মুক্তি দিতে তিন বছর লাগল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রযোজক সুমন ফারুক বলেন, আমরা কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে কয়েকটি ঈদে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু যাদের সঙ্গেই কথা বলেছি, তারাই বলেছে, ছবিটা মুক্তি দিয়েন না। সব মারদাঙ্গা ছবি আসতেছে। ফলে আর দিইনি। তা ছাড়া আমরা সুন্দর পরিবেশে সিনেমাটা রিলিজ দিতে চাইছিলাম, যেখানে মানুষের ভেতরে অস্থিরতা থাকবে না, মারামারি থাকবে না। ওই সব কারণে লেট হয়ে গেছে। প্রযোজনার পাশাপাশি ফেরেশতে ছবিতে অভিনয়ও করেছেন সুমন ফারুক।
সুমন ফারুক আরও বলেন, ফেরেশতে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনের গল্প। অ্যাকশন সিনেমার ভিড়ে অনেক দিন ধরেই এ ধরনের গল্প দর্শক দেখে না। আশা করছি, ছবিটি দর্শকদের প্রশান্তি দেবে। আমরা যেমন বিদেশি সিনেমা দেখে তাদের সংস্কৃতি জানতে পারি, তেমনি ফেরেশতে আমাদের সমাজ-সংস্কৃতির গল্প তুলে ধরেছে। প্রান্তিক মানুষের যে গল্প উচ্চবিত্ত সমাজ সহজে ভাবে না, সিনেমাটি সেই গল্প বলেছে। সিনেমাটি মানবিক মূল্যবোধ ও অনুভূতির মিশেলে তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে নির্মাতা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন।
ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহেদ আলী, শাহীন মৃধা ও শিশুশিল্পী সাথী। চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলাদেশের মুমিত আল-রশিদ। ফারসি ও বাংলা অনুবাদ করেছেন মুমিত আল-রশিদ ও ফয়সাল ইফরান।
ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও লায়ন সিনেমাসে দেখা যাবে ফেরেশতে।
আপনার মতামত লিখুন :