আমরা সবাই মাঝে মাঝে হজমের সমস্যা অনুভব করি। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এ ধরনের সমস্যা প্রতিদিন লেগে থাকে! এটি জীবনকে অস্বস্তিকর এবং ক্লান্তিকর করে তোলে। অন্ত্রের দুর্বল স্বাস্থ্য কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরই নয়, মেজাজ এবং শক্তির স্তরকেও প্রভাবিত করে। পেট ফাঁপা, বদহজম বা কোষ্ঠকাঠিন্য যাই হোক না কেন, হজমের সমস্যা মোটেও উপেক্ষা করা যাবে না। সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই হজম সমস্যাগুলো এড়াতে আপনার খাবারের তালিকায় কিছু উপাদান যোগ করতে পারেন। ৫টি বীজ রয়েছে যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে-
১. মৌরি
হজম উন্নত করার অন্যতম সেরা উপায় হলো আপনার খাদ্যতালিকায় মৌরি যোগ করা। এই বীজে অ্যানিথোল থাকে, যা অন্ত্রের পেশীকে শিথিল করে এবং পেটফাঁপা কমায়। বিশ্বের অনেক জায়গায়, মানুষ খাবারের পরে মৌরি খায় এবং এটি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত। অ্যানিথোল অন্ত্রের পেশীকে শিথিল করে, সেইসঙ্গে পেটফাঁপা ও ক্রাম্প কমায়। খাবারের পর চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা চা বানিয়েও পান করতে পারেন।
২. তিল
তিলের বীজে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা নিয়মিত মলত্যাগের গতি বাড়ায়। এই বীজকে খাদ্যতালিকায় যোগ করলে কোষ্ঠকাঠিন্যও প্রতিরোধ করা যায়। এই ক্ষুদ্র বীজ প্রিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে এবং উপকারী অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে। এতে ক্যালসিয়াম এবং জিঙ্কও বেশি থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য এবং ঘনত্ব উন্নত করে।
৩. কুমড়ার বীজ
খাদ্যতালিকায় আরেকটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে কুমড়ার বীজ। এতে ফাইবার, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কুমড়ার বীজ খেলে তা আপনাকে আরও ভালো ঘুমে সাহায্য করবে। কারণ এতে ট্রিপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা মেলাটোনিন উৎপাদন এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়তা করে। অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য রাতে ভালো ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. তিসি
আপনি যদি ধীর হজমের সঙ্গে লড়াই করে থাকেন, তাহলে তিসি হতে পারে আপনার ত্রাণকর্তা। এতে লিগনান থাকে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ যৌগ। এটি নিয়মিত মলত্যাগ, হরমোনের ভারসাম্য, ইস্ট্রোজেন বিপাক বাড়ায় এবং অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৫. চিয়া সিড
চিয়া সিডের একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি। চিয়া সিড দ্রবণীয় ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস, যা মল জমা করতে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং মাইক্রোবায়োমকে সহায়তা করতে পারে। যে কারণে এটি সুপারফুড। চিয়া বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে, যা ফাইবারের পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে ভূমিকা পালন করে। এর উচ্চ ফাইবারের পরিমাণ দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখে।
আপনার মতামত লিখুন :