বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পরিচয়ধারী ১২৩ জন ‘চাঁদাবাজের’ নাম সংবলিত একটি তালিকা রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এই তালিকায় বিএনপি, ছাত্রদল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ৪৪ জন নেতা-কর্মী, ক্যাডার, সমর্থকের নাম পরিচয় রয়েছে। রয়েছে আওয়ামী লীগের ২৫ জন ও জামায়াতের ৬ জনের নাম রয়েছে। তবে বাকিগুলোর নাম ঠিকানা থাকলেও নেই রাজনৈতিক পরিচয়। তাদের বলা হয়েছে ‘সুবিধাবাদী’।
তবে পুলিশ বলছে- ‘এই রকম তালিকা তারা করেনি। তবে তালিকার বিষয়ে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের থেকে শুনেছেন।’ এই তালিকা পুলিশের নাকি সরকারের অন্য কোনো সংস্থার তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সম্প্রতি রাজশাহীর একজন আবাসন ব্যবসায়ীর দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলায় এই তালিকার ১৮ জনের নাম রয়েছে। সেই মামলায় ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাদের প্রধান আসামি করা হয়েছে। এই মামলার প্রতিবাদে তারা নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ছাড়াও নগরীর সাহেববাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
তালিকায় দেখা গেছে- বোয়ালিয়া থানা এলাকায় ২২ জন, রাজপাড়া থানা এলাকায় ১৮ জন, চনিন্দ্রমা থানা এলাকায় ১২ জন, মতিহার থানা এলাকায় ৭ জন, শাহ মখদুম থানা এলাকায় ২০ জন, এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় ১০ জন, পবা থানা এলাকায় ৮ জন, কর্নহার থানা এলাকায় ২০ জন এবং কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকার ৬ জনের নাম রয়েছে।
এই তালিকায় মহানগর বিএনপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। মহানগর বিএনপির এক সদস্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, নগরের বোয়ালিয়া থানাধীন ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি করেন তিনি। ছাত্রদলের এক নেতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের অনুসারীদের মামলার ভয়ভীতি ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকে চাঁদাবাজি করেছেন তিনি।
জামায়াতের একজনকে ‘ক্যাডার’র সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভূমি দখল ও কেনাবেচা, বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিদের হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা দিয়ে চাঁদা আদায় করেন তিনি। জামায়াতের আরও যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাদের সবার নামে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর একজনের বিরুদ্ধে মাদক কারবারির অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা বলেন, তালিকার কথা শুনেছি। তবে দেখিনি। যদি প্রশাসন বিষয়টি না জানে। তাহলে শত্রুতামূলক কেউ এই তালিকা ছেড়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডলের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি কেটে দেন। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অন্য গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, যাদের নাম তালিকায় আছে, তাদের সংগঠন থেকে সম্পূর্ণ বয়কট করা হয়েছে। নেতাদেরও বলে দেওয়া হয়েছে কারও কাছে যেন তারা ঘেঁষতে না পারেন।
তালিকার বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. গাজিউর রহমান বলেন, এই রকম তালিকা তারা করেনি। তবে তালিকার বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের থেকে তারা শুনেছেন। তবে তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা যদি সত্যিই চাঁদাবাজ হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
আপনার মতামত লিখুন :