মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এর খন্ডকালীন প্রাক্তন এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় শনিবার (২৮শে সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা পূর্বে ও উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করতেন। বিগত ২০১৪ সালে উক্ত স্কুলের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অপরাধে তাকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। পরে সে তার স্থায়ী ঠিকানায় চলে যায়। বিগত এক বছর পূর্বে সে আবারও শ্রীমঙ্গলে এসে কলেজ রোডস্থ (ডাক বাংলো পুকুর পাড়) মুজিব মিয়ার বাসার নীচতলায় 'টেকনিক কোচিং একাডেমী' চালু করেন।
উপজেলার সবুজবাগ এলাকার ওই শিক্ষার্থীর মা'র অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, আরো, আমার মেয়ে বর্তমানে উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেনীতে পড়ালেখা করে। আমার মেয়ে ৯ম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় এই শিক্ষকের কোচিংয়ে ভর্তি হয়।
এর পর থেকে বিভিন্ন ছাত্রীদের ন্যায় আমার মেয়েকেও যৌন হয়রানী করে আসছে এই শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা। কোচিংয়ে পড়ানোর সুযোগে বিভিন্ন সময় সে আমার মেয়ের শরীরে অসৎ উদ্দেশ্যে স্পর্শ করে।
আরো উল্লেখ করেন, গত (২৭শে সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার সময় আমার মেয়ে পড়ার জন্য কোচিংয়ে যায়। পড়া অবস্থায় আমার মেয়ের কাছে এসে পিঠে এবং শরীরের স্পর্শকাতর অংশে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে। তখন আমার মেয়ে চিৎকার করে অন্যান্য ছাত্রীর কাছে বিষয়টি জানালে অন্য ছাত্রীরাও জানান, তাদেরকেও একই ভাবে পড়ানোর সময় শরীরে স্পর্শ করে ও বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানী করতেন শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা।
ঘটনার বিষয়টি আমার মেয়ে ফোন করে আমাকে জানালে তাৎক্ষনিক আমি কোচিংয়ে এসে আমার মেয়ে ও অন্যান্য ছাত্রীদের নিকট হতে ঘটনার বিষয়টি বিস্তারিত শুনি।
এ শিক্ষক পড়ানোর আড়ালে দীর্ঘদিন থেকে সাধারণ ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করে আসছে। একই ধরনের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছাত্রীদের সাথে ঘটেছে। থানায় দায়েরকৃত এ অভিযোগে ভুক্তভোগী ৯জন শিক্ষার্থী সাক্ষী হিসেবে রয়েছে।
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ২০১৪ সালে যৌন হয়রানীর অভিযোগে এই শিক্ষককে উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। ওই ঘটনায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মাকে এক মাসের জেলহাজতে দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :