একটা সময় ছিল, যখন মাদাগাস্কারকে বলা হতো আফ্রিকার মুক্তা। কিন্তু আজ সেই দ্বীপ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে অস্থিরতা, ভয় ও অনিশ্চয়তা। রাজধানীর রাস্তায় ধোঁয়া, স্লোগানে ভরে গেছে বাতাস তারা চায় পরিবর্তন, চায় নতুন সূর্যোদয়। কিন্তু তার আগেই নেমে এসেছে অন্ধকার।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা গণবিক্ষোভ আর সামরিক বিদ্রোহের মুখে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রজোয়েলিনা অবশেষে পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে। দেশটির সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, তারা এখন নিয়ন্ত্রণে। এএফপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশটির সেনাবাহিনীর একজন ‘কর্নেল’ ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনার আগে, প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনাকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন দেশটির বর্তমান সংসদ সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) মাদাগাস্কারের জাতীয় পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটে ১৩০টি ভোট আন্দ্রে রাজোয়েলিনাকে অভিশংসনের পক্ষে পড়ে। তবে অভিশংসন ভোট অনুষ্ঠানের নিন্দা করেন রাজোয়েলিনা।
সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া সত্ত্বেও সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে ভোটটি অসাংবিধানিক বলে দাবি করেন তিনি। এরপরেই জানা যায় সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের খবর।
এর আগে সোমবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় ৫১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট রজোয়েলিনা তার অবস্থান প্রকাশ না করেই বলেন, সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিকদের একটি দল আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। নিজের জীবন বাঁচাতে আমি নিরাপদ স্থান খুঁজতে বাধ্য হয়েছি। তবে তিনি পদত্যাগের কোনো ঘোষণা দেননি।
তবে গেলো দুই সপ্তাহ ধরে দেশটিতে ‘জেন জি মাদা’ নামে পরিচিত তরুণ বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে দেশজুড়ে চলে সরকার বিরোধী প্রতিবাদ। প্রথমে পানি ও বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে এই প্রতিবাদ শুরু হলেও পরে এটি দুর্নীতি, উচ্চ বেকারত্ব এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির মতো ব্যাপক অসন্তোষে রূপ নেয়। বিক্ষোভ থামাতে রজোয়েলিনা তার পুরো মন্ত্রিসভা ভেঙে দিলেও, বিক্ষোভকারীরা অনড় থাকে তার পদত্যাগ দাবিতে।
আপনার মতামত লিখুন :