আমাদের মুখ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যের প্রতিফলন হিসেবে কাজ করে। ঠোঁট, মাড়ি বা জিহ্বার চারপাশে ছোট ছোট পরিবর্তন পুষ্টির ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে। এই লক্ষণগুলি প্রাথমিকভাবে সাধারণ বলে মনে হতে পারে, তবে এগুলো এমন সতর্কতামূলক লক্ষণ যা সমাধান না করা হলে রক্তক্ষরণ বা গুরুতর অসুস্থতার মতো আরও বড় সমস্যা হতে পারে। উপযুক্ত সময়ে ঘাটতি ধরার জন্য এই লক্ষণগুলো খেয়াল করা জরুরি-
১. ঠোঁটের কোণে ফাটল
ঠোঁটের কোণে ছোট কিন্তু নরম ফাটল শরীরে পুষ্টির ঘাটতির একটি পরিচিত লক্ষণ। অ্যাঙ্গুলার চাইলাইটিস আয়রন, জিঙ্ক বা বি ভিটামিনের ঘাটতির কারণে ঘটে থাকে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় বা অতিরিক্ত ঠোঁট চাটার কারণে এই ঘায়ে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা বারবার দেখা দিলে বুঝবেন, এটি পুষ্টির ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত।
২. জিহ্বা ফুলে যাওয়া
একটি সাধারণ জিহ্বায় প্যাপিলি নামক ছোট ছোট ফোঁড়া থাকে। যখন ফোঁড়াগুলো অদৃশ্য হয়ে যায় এবং জিহ্বা অতিরিক্ত মসৃণ, চকচকে বা ফোলা দেখা যায়, তখন এটি সাধারণত বি ভিটামিনের অভাব নির্দেশ করে, বিশেষ করে ফোলেট, নিয়াসিন এবং বি১২। আয়রনের অভাবও এই পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। জিহ্বা ব্যথা করতে পারে এবং খাওয়া বা কথা বলা কষ্টকর হতে পারে।
৩. মাড়ি থেকে রক্তপাত
মাড়ি থেকে রক্তপাত সাধারণত খুব বেশি জোড়ে দাঁত ব্রাশ করা বা দাঁতের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবহেলার কারণে হয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী মাড়ির রক্তপাত ভিটামিন সি-এর অভাবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। রক্তনালী এবং সংযোগকারী টিস্যুগুলোকে শক্তিশালী রাখার জন্য ভিটামিন সি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভিটামিন সি এর ঘাটতি হলে মাড়ি দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজেই রক্তপাত শুরু হয়।
৪. ঘন ঘন মুখের আলসার
ঘন ঘনমুখের আলসার শরীরে পুষ্টির অভাবের আরেকটি লক্ষণ। আয়রন, ফোলেট, ভিটামিন বি১২ এবং বি৬ হলো কেন্দ্রীয় পুষ্টি উপাদান যা কোষ মেরামত এবং রক্ত গঠনে ভূমিকা পালন করে। যখন এগুলোর ঘাটতি দেখা দেয়, তখন মুখের ভেতরের দুর্বল আস্তরণ ক্ষতি এবং আলসারের জন্য বেশি সংবেদনশীল হয়।
৫. জ্বালাপোড়া বা ঝিনঝিন অনুভূতি
জিহ্বা বা মুখের ভেতরে ঝিনঝিন বা জ্বলন্ত অনুভূতি খুব সহজেই উপেক্ষা করা হয়, তবে এটি আয়রন বা বি ভিটামিনের ঘাটতি নির্দেশ করতে পারে। এগুলো স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং টিস্যু নিরাময়ের জন্য কাজ করে। এই লক্ষণটি ঘা কিংবা আলসারের মতো স্পষ্ট নয়, তবে সতর্ক হয়ে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :