চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জেরিয়াট্রিক কেয়ার তথা প্রবীণজনের সেবাকে পরিবার থেকে শুরু করে প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন সহায়তায় সম্প্রসারণ করতে হবে। প্রবীণদের যত্ন কীভাবে নিতে হয় এবং কীভাবে সেটিকে অনলাইনে এনে ‘নবীনের হাতে প্রবীণের নিরাপদ বার্ধক্য’ এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেটিই সময়ের দাবি।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে প্রবীণদের যত্ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র অনলাইনে একজন বৃদ্ধার সঙ্গে মুঠোফোনে কাউন্সেলিং করার মাধ্যমে প্রবীণদের জন্য অনলাইন কাউন্সেলিং সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মেয়র বলেন, প্রবীণদের যত্নের শুরু পরিবার থেকে। প্রথমে নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার মা-বাবা আপনার কাছে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কি না। প্রবীণদের স্বাধীনতা ও সম্মান নিশ্চিত করতে পারলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আসে।
উদাহরণ টেনে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, একটি হাসিমুখ, সালাম বা কুশল জিজ্ঞাসা রাস্তায় একজন বৃদ্ধ রিকশাচালকের মনেও যে কত আনন্দ দেয়, আমরা তা প্রায়ই ভুলে যাই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবেগজনিত চাহিদা বেড়ে যায়; সেক্ষেত্রে ধৈর্য ও সহমর্মিতাই সবচেয়ে বড় ওষুধ।
বক্তব্যে তিনি প্রবীণজনের প্রচলিত শারীরিক সমস্যাগুলোর কথা উল্লেখ করেন– আর্থরাইটিস, অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভঙ্গুরতা ও ডিমেনশিয়া। মেয়রের ভাষায়, সাপ্লিমেন্টের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম বিশেষ করে জয়েন্ট ও বড় পেশির ব্যায়ামের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। অনেকের ক্ষেত্রে ‘প্যাসিভ এক্সারসাইজ’ শেখাতে হবে; এটি অনলাইন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমেও দেওয়া সম্ভব।
ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে বিরক্ত না হয়ে বুঝিয়ে বলার পরামর্শ দিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বারবার একই কথা বলা বা ওষুধ ভুলে যাওয়া– এসব আচরণ রোগের লক্ষণ। যত্নশীল প্রতিক্রিয়া ও মনোসামাজিক সহায়তা এখানে অত্যন্ত প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেরিয়াট্রিক কেয়ার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. কাজী মো. ইসরাফিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি এস এম নসরুল কদির, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও প্রশাসক, জেলা পরিষদ মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের হেড ডা. মনোজ কুমার বড়ুয়া।
আপনার মতামত লিখুন :