ওয়াইফাই শহর নামের অধিকারী বাংলাদেশের ডিজিটাল শহর হলো সিলেট সিটি কর্পোরেশন। ২০২৩ সালে ২১ জুন মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র সিলেট সিটির অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ঘোষনা দেয় নতুন গৃহকরের। তবে এটা প্রকাশ পাওয়ার পর অনেকেরই বাসাবাড়ির কর অস্বাভাবিকভাবে বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। নতুন এই গৃহকরের বিরুদ্ধে নগরবাসী শুরু করে আন্দোলন।
নগরবাসীর আন্দোলনে তোপের মুখে পড়ে অবশেষে নতুন গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) বাতিল করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। শুক্রবার (২৪ মে) রাত ৯টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নতুন গৃহকর বাতিলের ঘোষণা দেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এর আগে সিটি কর্পোরেশন পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডে নতুন গৃহকর আরোপ করা হয়। এতে অনেক বাসাবাড়ি গৃহকর ৫০০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এ নিয়ে আন্দোলন ও প্রতিবাদ শুরু করেন নগরবাসী। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার (২২ মে) নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন করে সিসিক। সভার শুরুতেই বিক্ষুব্ধ নাগরিকদের সঙ্গে সিসিক কাউন্সিলদের হট্টগোল ও উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার সিসিক পরিষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নতুন আরোপিত গৃহকর বাতিলের ঘোষণা দেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, নতুন গৃহকর নিয়ে যেহেতু মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সেহেতু এটা আর রাখা যাবে না। এটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ। পরবর্তীসময় নতুন করে ৪২টি ওয়ার্ডে অ্যাসেসমেন্ট করে নতুন গৃহকর নির্ধারণ করা হবে।
আনোয়ারুজ্জামান বলেন, সাবেক মেয়র আরিফুল হক অ্যাসেসমেন্ট করেছেন। আমরা এটা চালু করেছি। আমরা সাবেক মেয়রকে দোষারোপ করছি না। কিন্তু সবার মনে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় এটা বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণের প্রতিনিধি। যেহেতু জনগণের মনে প্রশ্ন এসেছে, তাই আমরা সেটাকে আমলে নিয়ে এ সিদ্ধান্তে এসেছি।
মেয়র বলেন, নতুন গৃহকর ছিল সিটি করপোরেশনের পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য। পরে ৪২টি ওয়ার্ডে নতুন করে অ্যাসেসমন্ট করে গৃহকর নির্ধারণ করা হবে। আর যাতে কোনো প্রশ্ন না আসে বিষয়টি মাথায় নিয়ে গৃহকর নির্ধারণ করা হবে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পরবর্তীসময় অন্য কোনো সিটির সঙ্গে তুলনা করে গৃহকর নির্ধারণ করা হবে না। আমাদের নাগরিকরা যেটা মেনে নিতে পারবেন সেই হারে গৃহকর নির্ধারণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, নতুন গৃহকর বাতিল হলেও ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বকেয়া গৃহকর আদায় অব্যাহত থাকবে। আর যারা নতুন হারে গৃহকর জমা দিয়েছেন তাদেরটা সমন্বয় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলর, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানসহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :