বরিশালে ‘ভাড়া নিয়ে তর্কবিতর্ক থেকে’ বিএম কলেজের শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের হাতাহাতির পর নগরীর নথুল্লাবাদ টার্মিনালের শতাধিক বাস ও কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে তিন ঘণ্টা ধরে চলা উত্তেজনার মধ্যে বাসে আগুন দেওয়া হয় এবং মোটরাসাইকেল ভাঙচুরও করা হয় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, ভাড়া নিয়ে তর্ক ও হাতাহাতির পর শতাধিক শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ টার্মিনালে থাকা বাস ও কাউন্টার ভাঙচুর করেন। সেসময় নুর পরিবহন নামে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। রাত ৯টার পর সেনাবাহিনী গিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নথুল্লাহবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
শিক্ষার্থীরা অবরোধ করায় বরগুনা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে আসা যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পরিবহন কর্মীরা টার্মিনালের গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।
আল আমিন নামে এক শ্রমিক বলেন, ভাড়া নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। ছাত্ররা বাসের ড্রাইভারকে মেরেছে। তারা যদি মার খায়, তাহলে তারাও (শ্রমিকরা) তো মারবে। এরপর ছাত্ররাসহ দুষ্কৃতিকারীরা এসে বাস ভাঙচুর করেছে।
বিএম কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু বলেন, আমাদের এক শিক্ষার্থী যখন হেনস্তা হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমরা জিজ্ঞেস করতে আসি। তখন শ্রমিকরা আমাদের পাল্টা হুমকি দিয়েছে গালিগালাজ করেছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন, বাস ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্ক-বির্তক হয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এক অফিসার সাড়া দেন। ছাত্র ও শ্রমিকদের নিয়ে সমাধানের একটি পথে যাচ্ছিলেন। ‘উত্তেজনাকর একটি কথার কারণে’ সমাধান হয়নি। আস্তে আস্তে ঘটনার বিস্তার লাভ করে বেশি। প্রথম থেকেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল। প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি।
সংঘাতে কেউ হতাহত হয়নি জানিয়ে ওসি বলেন, কতটি বাস ভাংচুর করা হয়েছে, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি।
বিএম কলেজের অধ্যক্ষ শেখ তাজুল ইসলাম বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। হাফ ভাড়া কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। সেই ঘটনা তার বন্ধুরা জানতে এলে তাদের উপরও হামলা করা হয়েছে।
বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেনের দাবি, টার্মিনালের সব বাস ভাঙচুর করেছে। কাউন্টার ভাঙচুর করেছে। টাকা-পয়সা লুট করেছে। ‘হাজারখানেক’ লোক ছিল। ছাত্ররা না কারা ছিল এখন পর্যন্ত বলতে পারি না। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাও জানি না। রবিবার সকাল থেকে কোনো বাস চালানো যাবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ এগুলো সব মেরামত করতে হবে।








































আপনার মতামত লিখুন :