Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

লুটের পাথর মাটি দিয়ে ঢাকছেন ব্যবসায়ীরা


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম লুটের পাথর মাটি দিয়ে ঢাকছেন ব্যবসায়ীরা

সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদাপাথর’ থেকে লুট হাওয়া পাথর উদ্ধারে প্রশাসনের অভিযান শুরু করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্র্যাশার মিল ব্যবসায়ীরা লুট করা পাথরের উপর বালু ও মাটি ফেলে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল লালবাগ, সালুটিকর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকায় এই দৃশ্য দেখা গেছে।
অভিযান শুরুর পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অধিকাংশ ক্র্যাশার মিল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। অনেক ক্র্যাশার মিল মালিক, বালু ও পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতরা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে এলাকার বাসিন্দারা জানান।
ভোলাগঞ্জের পাথর ভাঙার মিল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মিলের সামনে আমদানি করা পাথর রাখা হয়েছে। আর মিলের পেছনে থাকা লুট হওয়া পাথর বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো মিলে দ্রুত ভেঙে ফেলা হচ্ছে সাদাপাথরের লুট হওয়া পাথর।
সদর উপজেলার ধুপাগুল-লালবাগ এলাকায় মিলের পাশে থাকা মাটি তোলে পাথরের উপর ফেলে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ধোপাগুল শহীদ মিনার এলাকায় মিলেও এ রকম দৃশ্য চোখে পড়েছে। তবে সাংবাদিক পরিচয় জেনে এ নিয়ে এলাকার বাসিন্দা কিংবা মিল কর্মচারী কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
একজন বাসিন্দা (৩০) বলেন, প্রশাসনের অভিযান শুরুর পর পাথর মিলের মালিকেরা লুট হওয়া পাথর নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। সরকারি অভিযানের দলের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিতে বালু বা মাটি দিয়ে উপরে প্রলেপ দিচ্ছেন। যাতে বালু বা মাটির স্তূপ বলে মনে হয়। কেনো কোনো মিলে পাথরগুলোকে কালো বা পুরাতন দেখানোর জন্য মাটি আর বালু একসঙ্গে লাগানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিলেট সদর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, আমাদের অভিযান চলমান আছে ওই এলাকায়। বালু-মাটি দিয়ে পাথর লুকালো তাদের বিরুদ্ধে অভিযান হবে। আমরা খবর পেয়েছি, সদর উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে পাথর লুকানো হচ্ছে। এসব পাথর উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলবে।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, পাথর উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলমান আছে। বালু বা মাটি দিয়ে লুকানো পাথর অভিযানকালে উদ্ধার করা হবে।
গত বছরের ৫ অগাস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকেই সিলেটের অন্যান্য পাথর কোয়ারির মত সাদাপাথরেও শুরু হয় ব্যাপক লুটপাট। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়লে দুদকসহ স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।
সাদাপাথর হিসেবে পরিচিত ধলাই নদের উৎসমুখে বিপুল পরিমাণ পাথর জমা হয়েছিল। লাগামহীন লুটপাটের কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এ পর্যটনকেন্দ্র। দিনের বেলা প্রকাশ্যেই সেই সব পাথর নৌকা করে নিয়ে লুট করা শুরু হয়। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন করা হয়। নদী তীরের বালি খুঁড়েও লুটপাট চলে।
এই অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট ভোলাগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদাপাথর’ থেকে লুট হওয়া পাথর সাত দিনের মধ্যে উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদনটি করেন সরওয়ার আহাদ। শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ।

Side banner