Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

ড্রাগন ফল: কতটা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন


দৈনিক পরিবার | জীবনযাপন ডেস্ক আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম ড্রাগন ফল: কতটা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন

বিদেশি ফল হলেও ড্রাগন ফলের ‘বাম্পার ফলন’ই হচ্ছে বাংলাদেশে। ফলে বাজারে এখন দামও কম। রোজকার সাদামাটা খাদ্যতালিকায় বৈচিত্র্য আনতে পারে ড্রাগন ফল, পুষ্টিগুণেও দারুণ। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে এর উপকার পাবেন আরও বেশি।
ড্রাগন ফল কয়েক রকম হতে পারে। ফলের ভেতর দিকটা হতে পারে সাদা অথবা ম্যাজেন্টা জাতীয় রঙের। সব ধরনের ড্রাগন ফলই উপকারী। ড্রাগন ফলে আছে কয়েক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান। আঁশও থাকে বেশ। এ সম্পর্কে জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
কী আছে ড্রাগন ফলে
প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে আছে ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৩ গ্রাম আঁশ।
এই কার্বোহাইড্রেট হলো ফ্রুক্টোজ, অর্থাৎ ফলজ শর্করা। এটি ক্ষতিকর নয়।
১০০ গ্রাম ড্রাগন ফল খেলে আপনি পাবেন ৫০-৬০ ক্যালরি।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির রোজকার চাহিদার ৫ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ২ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায় ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফল থেকে।
এতে আরও থাকে ভিটামিন এ।
ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং অন্যান্য অ্যান্টি অক্সিডেন্টও আছে এতে।
খানিকটা আয়রন আর ক্যালসিয়ামও পাবেন।
অ্যান্টি অক্সিডেন্টের নানা উপকার
দেহের তারুণ্য ধরে রাখতে অনেকভাবেই সাহায্য করে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ত্বকের ব্যাপারটাই ধরা যাক। ত্বকের পুরুত্ব ও স্থিতিস্থাপকতা ঠিক রাখে কোলাজেন নামের প্রোটিন। কোলাজেন তৈরির জন্য আমাদের প্রয়োজন পর্যাপ্ত ভিটামিন সি, যা পাবেন ড্রাগন ফলে।
ত্বকে বয়সের ছাপ কমানোর কাজে সহায়তা করে ড্রাগন ফলে থাকা নানা রকম অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ত্বকের সৌন্দর্যে সিরাম ব্যবহার করেন অনেকে। ত্বককে সতেজ রাখতে কাজে আসে সিরাম। ড্রাগন ফল থেকেও আপনি এই উপকার পাবেন।
দেহের রোজকার ক্ষয় পূরণ করে ভেতর থেকে দেহকে তরুণ রাখতেও ড্রাগন ফলের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান।
যে কারণে পেটের জন্য ভালো
ড্রাগন ফলে থাকা আঁশ পেটের জন্য উপকারী। কোষ্টকাঠিন্য এড়াতে যে রোজ পর্যাপ্ত আঁশ প্রয়োজন, তা তো সবারই জানা।
ড্রাগন ফল প্রিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে। প্রিবায়োটিক হলো এমন উপাদান, যা আমাদের অন্ত্রে থাকা উপকারী জীবাণুদের পুষ্টি জোগায়। পেটের সুস্থতার জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া আবশ্যক। এরা আমাদের খাবারের পরিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে।
এ ছাড়া উপকারী জীবাণুর উপস্থিতিতে ক্ষতিকর জীবাণুর বেড়ে ওঠার সুযোগ কমে যায়। বুঝতেই পারছেন, পরোক্ষভাবে ড্রাগন ফল আপনার অনেক কাজেই আসবে।
দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতায় আরও যা
ড্রাগন ফলে থাকা আঁশ আপনার রক্তের সুগার ও খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে তা সাহায্য করতে পারে ওজন নিয়ন্ত্রণেও। কারণ, এতে ক্যালরির পরিমাণ খুব বেশি নয়।
পর্যাপ্ত আঁশ থাকায় এটি খাওয়ার পর বেশ অনেকটা সময় আপনার পেট ভরা থাকবে। অর্থাৎ অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার প্রবণতা কমবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে পরোক্ষভাবে আপনি স্থূলতা সংক্রান্ত বহু জটিলতা থেকে বাঁচবেন।
ড্রাগন ফলে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধেও সহায়তা করতে পারে। উদ্ভিজ্জ আয়রন শোষণ হওয়ার জন্য যে ভিটামিন সি প্রয়োজন, তা তো রয়েছেই ড্রাগন ফলে। তাই অন্যান্য উদ্ভিজ্জ খাবারে থাকা আয়রন শোষণেও সাহায্য করতে পারে ড্রাগন ফল। মিশ্র ফলের সালাদে ড্রাগন ফল যোগ করলে এই উপকার মিলবে।
যেভাবে খাবেন, যতটা খাবেন
ড্রাগন ফলের অনেক গুণ। তবে তা অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। তাতে পেটে অস্বস্তি হতে পার। বরং একবেলার স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন।
স্ন্যাকস হিসেবে কেবল কয়েক স্লাইস ড্রাগন ফল খাওয়া যেতে পারে, অথবা অন্যান্য ফলের সঙ্গে মিশিয়ে সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন।
চাইলে টক দইয়ের সঙ্গেও খেতে পারেন ড্রাগন ফল।
কেউ কেউ ড্রাগন ফল দিয়ে পানীয় তৈরি করে খান। এটিও উপকারী। তবে মনে রাখতে হবে, পানীয় থেকে আপনি আঁশ পাবেন না। তাই সব উপকারও মিলবে না।
ড্রাগন ফল খাওয়ার পর কারও কারও এই ফলের রঙের প্রস্রাব হতে পারে। এতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই।

Side banner